অনলাইন ডেস্ক
রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের একটি ক্যাফেতে বিস্ফোরণে প্রখ্যাত এক সামরিক ব্লগার নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। রুশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের কাছেই নেভা নদীর তীরে অবস্থিত ‘স্ট্রিট ফুড বার নম্বর ওয়ান’ নামের ক্যাফেতে সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে। ঘটনার পরপরই সেখানে পুলিশ উপস্থিত হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক টেলিগ্রাম পোস্টে জানিয়েছে, নিহত ব্লগার ও সামরিক সংবাদদাতার নাম ভ্লাদলেন তাতারস্কি। তদন্তকারীরা বলেছেন, ক্যাফের ভেতরে কোনো একটি যন্ত্রের বিস্ফোরণের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ক্যাফে বিস্ফোরণে ২৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা বেশ গুরুতর।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস বলেছে, তাতারস্কিকে উপহার দেওয়া একটি মূর্তির ভেতরে একটি ইম্প্রোভাইজড বিস্ফোরক লুকানো ছিল। সেটির বিস্ফোরণে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। রিয়া নভোস্তি এজেন্সি জানিয়েছে, একটি মেয়ে ওই ব্লগারকে মূর্তিটি উপহার দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
ক্যাফের একজন নারী কর্মী আলিসা স্মোট্রোভা এএফপিকে বলেছেন, একজন নারী ওই ব্লগারকে মূর্তিটি দিয়েছিলেন। পরে হঠাৎ সেটির বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তে রক্ত আর কাচের টুকরোয় মেঝে ভরে যায়।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাতারস্কির প্রকৃত নাম ম্যাক্সিম ফোমিন। টেলিগ্রামে তাঁর পাঁচ লাখের বেশি ফলোয়ার রয়েছে। তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের পক্ষে প্রচারণার কাজ করতেন। বিস্ফোরণের সময় তিনি ওই ক্যাফেতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি বলেছে, বিস্ফোরণের পরে টেলিগ্রামে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তাতারস্কিকে একটি মূর্তি হস্তান্তর করা হচ্ছে। তিনি এটি নিয়ে রসিকতা করছিলেন। তবে এর ভেতরে বিস্ফোরক ছিল কি না তা যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
৪০ বছর বয়সী তাতারস্কি পূর্ব ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক অঞ্চল থেকে এসেছেন। রাশিয়া এ অঞ্চলকে নিজেদের বলে দাবি করে।
এ বিস্ফোরণের পর এক প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সহযোগী মিখাইলো পেদোলিয়াক এক টুইটার পোস্টে বলেছেন, ঘরোয়া সন্ত্রাসবাদ কখন যে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক লড়াইয়ের হাতিয়ার হয়ে উঠবে, সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলার এখনই সময়।