যুদ্ধবন্দী বহনকারী উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে উদ্যোগ নিচ্ছে ইউক্রেন। রুশ উড়োজাহাজটি যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছে, সেই এলাকা পরিদর্শনে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কিয়েভ। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এ ঘটনায় নিজেরাও তদন্ত শুরু করেছে ইউক্রেন। এ ছাড়া বিধ্বস্তের ঘটনায় ইউক্রেনকে দায়ী করে যে অভিযোগ রাশিয়া উপস্থাপন করেছে, তা নিয়েও আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে জাতিসংঘ।
গত বুধবার মস্কো দাবি করে, রাশিয়ার বেলগরদ অঞ্চলে একটি রুশ সামরিক উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ইউক্রেনের ৬৫ সেনা ছিল। যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে তাঁদের ইউক্রেনে নেওয়া হচ্ছিল। এই হামলাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উল্লেখ করে মস্কো বলেছে, উড়োজাহাজটি গুলি করে ভূপাতিত করেছে কিয়েভ। ইউক্রেনের অস্ত্রের আঘাতেই বিধ্বস্ত হয়েছে এটি।
এ ঘটনার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তদন্ত দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গতকাল বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের পার্লামেন্টে মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনার দিমিত্রো লুবিনেতস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি এসব সংস্থার প্রতিনিধিদের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য জানাব।’
সেই সঙ্গে ইউক্রেন নিজেও এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষেবা বিভাগ এসবিইউ গতকাল এক বিবৃতিতে জানায়, রাশিয়ান এয়ারফোর্সের আইএল-৭৬ উড়োযানটি ভূপাতিত করার ঘটনায় অপরাধমূলক তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দুর্ঘটনার বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য পেতে কাজ করা হচ্ছে।
উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও গড়িয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্সি কাউন্সিল গতকাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তারা বলছে, রাশিয়ার আহ্বানে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল বিকেল ৫টায় একটি বৈঠক হবে।
এদিকে, যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় রাশিয়ার কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন। এ বিষয়ে অন্তত ১ কোটি অভিযোগ নথিভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয়দের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা।
কাউন্সিল অব ইউরোপের সঙ্গে সম্পৃক্ত ওই সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মার্কিয়ান ক্লিউচকোভস্কি বলেন, হতাহতের বিষয়ের সঙ্গে বাস্তুচ্যুতি বা নির্বাসন, নির্যাতন, যৌন সহিংসতাসংক্রান্ত অভিযোগগুলো সংগ্রহ করা হবে। এ ছাড়া নাগরিকদের আয়, রাজস্ব বা সম্পত্তির ক্ষতি, ব্যবসার ক্ষতি এবং পরিবেশের ক্ষতিসম্পর্কিত দাবিও থাকবে এতে।