ইউক্রেন রণক্ষেত্রে রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে। আর এসব ক্ষেপণাস্ত্র আসছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। খোদ মার্কিন কর্মকর্তারাই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র গোপনে ইউক্রেনে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে আসছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। তাঁরা জানিয়েছেন, মূলত যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে ইউক্রেনকে দেওয়া ৩০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তার অংশ হিসেবে এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পাঠানো হয়েছে ইউক্রেনে। গত মার্চে মাসে বাইডেন এই সহায়তা প্যাকেজের অনুমোদন দেন।
মার্কিন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এরই মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে অন্তত একবার হলেও। মার্কিন গণমাধ্যমের দাবি, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা ক্রিমিয়ায় রুশ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে ইউক্রেন এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে মাঝারি পাল্লার আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম বা এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছিল। কিন্তু সেই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর চেয়েও আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে দ্বিধান্বিত ছিল। যাই হোক, পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে বাইডেন ইউক্রেনে অন্তত ৩০০ কিলোমিটারের বেশি পাল্লাসম্পন্ন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে সবুজ সংকেত দেন।
ইউক্রেনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তথা স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি যে, যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টের সরাসরি নির্দেশনায় দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ইউক্রেনে পাঠিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এত দিন ইউক্রেনের অনুরোধে তাদের অপারেশনাল নিরাপত্তা বজায় রাখার স্বার্থে শুরুতে এটি কাউকে জানায়নি।’
যুক্তরাষ্ট্র কী পরিমাণ দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনে পাঠিয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, ওয়াশিংটন আরও এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। তিনি বলেন, ‘সেগুলো (রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে) তফাত গড়ে দেবে।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্স নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কিয়েভের তরফ থেকে প্রথম দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয় ক্রিমিয়া আক্রমণে। ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার একটি সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে সেই হামলা চালানো হয়েছিল। এমনকি গত মঙ্গলবার, রাশিয়ার দখলে থাকা বার্দিয়ানস্কেও দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রুশ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনের সেনারা।