ওয়াশিংটনের নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রাশিয়া–ইউক্রেন সংঘাতের নতুন এক মাত্রায় উত্তরণ ঘটতে পারে এবং ওয়াশিংটনের এ ধরনের পদক্ষেপ বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার শীর্ষ আইনপ্রণেতারা।
গতকাল রোববার দুই মার্কিন কর্মকর্তা এবং একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের এই সিদ্ধান্ত রাশিয়ার দৃষ্টিকোণে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
রাশিয়ার সংসদের উচ্চকক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ সদস্য আন্দ্রেই ক্লিশাস মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে বলেন, পশ্চিম এমন একটি মাত্রায় উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে যা এক রাতে ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ ধ্বংস ডেকে আনতে পারে।
রাশিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির প্রথম ডেপুটি প্রধান ভ্লাদিমির জাবারভ বলেন, এটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, মস্কো দ্রুত ও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে। রুশ রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা তাস নিউজ এজেন্সি তাঁর এই বক্তব্য প্রকাশ করেছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এর আগে সেপ্টেম্বরে বলেছিলেন, যদি পশ্চিম ইউক্রেনকে পশ্চিমা তৈরি দীর্ঘ-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে আঘাত হানার অনুমোদন দেয়, তবে এটি সংঘাতের প্রকৃতি এবং ব্যাপ্তি পরিবর্তন করবে।
পুতিন আরও বলেন, এই ধরনের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।
রাশিয়ার সংসদের নিম্নকক্ষ স্টেট দুমার পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান লিওনিদ স্লুৎস্কি সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে এটিএসিএমএস কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার গভীরে আঘাত হানার অনুমতি দেয়, তবে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
তাস নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন তাঁর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, রুশ অঞ্চলের গভীরে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা অনিবার্যভাবে গুরুতর উত্তেজনা সৃষ্টি করবে, যা আরও ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধের চিত্র বদলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাশিয়া এটিকে সরাসরি পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সংঘাত হিসেবে বিবেচনা করতে পারে, যা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী অস্থিরতার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এখন দেখার বিষয়, রাশিয়া কী ধরনের ‘উপযুক্ত পদক্ষেপ’ গ্রহণ করে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করে।