ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র জাপোরিঝিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের লভিভে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এই আহ্বান জানান তিনি। বৈঠকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান উপস্থিত ছিলেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের তীব্র ক্রমশ বাড়তে থাকায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমেই আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সেই আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতেই জাতিসংঘের প্রতি জেলেনস্কির এই আহ্বান।
জেলেনস্কি গুতেরেস এবং এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, ‘জাতিসংঘকে অবশ্যই এই কৌশলগত স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, এই অঞ্চলকে নিরস্ত্রীকরণ এবং রাশিয়ার সৈন্যদের আক্রমণের হাত থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।’ বিবৃতিতে জেলেনস্কি ওই অঞ্চলে রাশিয়ার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইচ্ছাকৃত হামলার কড়া সমালোচনা করেন।
এর আগে, গতকাল বুধবার জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক গুতেরেস–এরদোয়ান–জেলেনস্কির বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছিলেন—জেলেনস্কি, এরদোয়ান এবং গুতেরেস ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি চুক্তি, জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করবেন।
স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে দেশটি সফরে যাচ্ছেন জাতিসংঘের মহাসচিব ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। আগামীকাল বৃহস্পতিবার লভিভে এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি চুক্তি, জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সার্বিক অবস্থা এবং চলমান সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করবেন তাঁরা। সফরের অংশ হিসেবে আগামী শুক্রবার তাঁরা ওদেসা সমুদ্রবন্দর পরিদর্শন করবেন।’
এর আগে, গত ২২ জুলাই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণ সাগরের অবরোধ আংশিক তুলে নিতে সম্মত হয় রাশিয়া। অবরোধ তুলে নেওয়ার পর থেকেই ওদেসাসহ কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী ইউক্রেনের আরও দুটি বন্দর থেকে প্রায় প্রতিদিনই দু-একটি করে জাহাজ খাদ্য শস্য নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা হচ্ছে। বিপরীতে, চুক্তি অনুসারে কৃষ্ণ সাগরে থাকা রুশ নৌ-বহরে হামলা না করা এবং রাশিয়ার শস্য রপ্তানি থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে কিয়েভ, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো।
এদিকে, গত ২৩ জুলাই ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর খেরসনকে রুশ দখল থেকে পুনরুদ্ধারে ঘোষণা দেন জেলেনস্কি। অক্টোবরের মধ্যে শহরটি পুনরুদ্ধার সম্ভব বলে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু খেরসন পুনরুদ্ধারে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। তবে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়ায় অবস্থিত রুশ সামরিক স্থাপনায় হামলা বাড়িয়েছে ইউক্রেন।