সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ৮ স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। আজ বুধবার সকালের এ ঘটনায় এক শিক্ষকসহ আরও ৬ জন আহত হয়েছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এই বন্দুক হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১৪ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রকে বেলগ্রেডের ভ্লাদিসলাভ রিবনিকার থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, ওই কিশোর তার বাবার বন্দুক স্কুলে নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। এটিকে সূত্র ধরে তদন্ত চলছে।
বন্দুক হামলার খবর পাওয়ার পর বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ পরিহিত পুলিশেরা রাজধানীর ভ্রাকার এলাকারা বিদ্যালয়টি ঘিরে নেয়।
সার্বিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, খবর পাওয়ার পর দ্রুতই পুলিশ প্রস্তুত থাকা সব ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে। ইতিমধ্যে একজন সন্দেহভাজন কিশোরকে গ্রেপ্তারও করেছে। সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্র তার বাবার বন্দুক দিয়ে স্কুলের ছাত্র ও নিরাপত্তাকর্মীদের দিকে গুলি ছুড়েছে।
সার্বিয়ার স্থানীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পুলিশ ওই কিশোরকে হাতকড়া পরিয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রিজনভ্যানে করে সরিয়ে নিয়েছে। এ সময় ওই কিশোরে মাথা একটি জ্যাকেট দিয়ে ঢাকা ছিল। তার মুখ দেখা যায়নি।
এক স্কুলছাত্র সাইবেরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরটিএসকে বলেছে, ‘আমি হঠাৎ দেখি বিদ্যালয়ের ছাত্ররা চিৎকার ও ছোটাছুটি করছে। পরে বাবা–মায়েরা আসে। তাঁরা সবাই আতঙ্কিত ছিল।
ওই স্কুলের এক ছাত্রীর বাবা মিলান মিলোসেভিক। তাঁর কন্যা ক্লাসরুমেই ছিল যখন বন্দুকধারী হামলা করে। তবে মেয়েটি নিরাপদেই স্কুল থেকে বের হতে পেরেছে। তিনি এন–১ টিভিকে বলেন, ‘ওই কিশোর প্রথমে শিক্ষককে গুলি করেছে। এরপর এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছে।’
মিলোসেভিক আরও বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীদের টেবিলের নিচে শুয়ে থাকতে দেখেছি। দুই ছাত্রীর জামায় রক্তের দাগ। ছাত্র–ছাত্রীরা বলছে ওই বালক কিছুদিন আগ থেকে বিদ্যালয়ে আসা শুরু করেছিল। ছেলেটি বেশ ভদ্র ও শান্তশিষ্ট ছিল।
বেলগ্রেডের ভ্রাকারা জেলার মেয়র মিলান নেদেল জোকোভিচ বলেছেন, ‘আহত শিক্ষকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে বাঁচাতে চিকিৎসকেরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’
সার্বিয়াতে প্রকাশ্যে বন্দুক হামলার ঘটনা বিরল। দেশটির অস্ত্র আইন বেশ কঠিন হওয়া সত্ত্বেও ইউরোপের সবচেয়ে বেশি বৈধ অস্ত্রের মালিক সার্বিয়ানরা।’ ৯০ এর দশকে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় পশ্চিমা বলকানদের কাছে হাজারো অবৈধ অস্ত্র ছিল। ২০১৯ সালে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সার্বিয়ার ১০০ জনের মধ্য ৩৯ জনের কাছেই আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে।