দক্ষিণ কোরিয়ায় বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী বেজায় রগচটা। একটুতেই মেজাজ খিচড়ে যায় তাঁর। লোকজনকে তখন মারধরও করেন। সর্বশেষ তাঁর শিকার হয়েছেন পার্কের এক পরিচ্ছন্নতা কর্মী।
রাষ্ট্রদূতের স্ত্রীর এই চরিত্রের কারণে বিব্রত বেলজিয়াম সরকার। রাষ্ট্রদূতকে দ্রুত দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার মাসের মধ্যে দুবার হামলার অভিযোগ ওঠার পর সিউল থেকে রাষ্ট্রদূতকে ‘দেরি না করে’ দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে বেলজিয়াম সরকার।
গত এপ্রিলের একটি ঘটনার পরে মে মাসের শেষদিকে রাষ্ট্রদূত পিটার লেসকোহিয়েরকে প্রথমে দেশে তলব করা হয়। ওই সময় তাঁর স্ত্রী সিয়াং সুয়েকিউ সিউলের একটি স্টোরে এক নারীকে পিটিয়েছিলেন। এ ঘটনা তখন দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
এ মাসেই রাষ্ট্রদূত লেসকোহিয়েরের বেলজিয়ামে ফেরার কথা ছিল। সর্বশেষ ঘটনার বিষয়ে সিউলের ইয়ংসান জেলা পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার সিএনএনকে জানায়, গত সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সিউলের পার্শ্ববর্তী হান্নাম এলাকায় পৌর পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন সিয়াং সুয়েকিউ।
পুলিশ জানিয়েছে, অজ্ঞাত পরিচয় এক পরিচ্ছন্নতা কর্মী পার্কে ঝাড়ু দিচ্ছিলেন। এ সময় অসাবধানতাবশত ঝাড়ুটি সিয়াংকে স্পর্শ করে। ওই পৌর কর্মচারী পুলিশকে জানায়, এই ঘটনার পর রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী তাঁকে চিৎকার করে শাসাতে থাকেন। গালে দুটি থাপ্পড় দেন। এরপর তিনি ওই নারীকে ধাক্কা দিলে মাটিতে পড়ে যান।
পরে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পুলিশ ডেকে আনেন। তখন দুজনেই মারামারি করার কথা স্বীকার করেন। সিয়াং পিঠে ব্যথা হওয়ার কথা জানালে পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কাছের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান।
বেলজিয়ামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র সিএনএনকে নিশ্চিত করেছেন, সেদিন সকালে সিয়াং সিউলের একটি পার্কে ‘বিবাদে’ জড়িয়েছিলেন। তবে এর কারণ স্পষ্ট নয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
একটি স্টোরের দুজন কর্মচারীর সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনার পর জুলাই মাসের মধ্যে রাষ্ট্রদূত তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে দেশে ফেরার কথা ছিল। এই নতুন পরিস্থিতি বিবেচনা করে, রাষ্ট্রদূতকে দ্রুত দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার উপ-প্রধানমন্ত্রী সোফি উইলমিস এই নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান ওই মুখপাত্র।
এর আগে এপ্রিলের ঘটনার পর পরই রাষ্ট্রদূত লেসকোহিয়ের স্ত্রীর পক্ষে ক্ষমা চেয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। তিনি তখন বলেছিলেন, এই ঘটনার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সেই দোকানে তাঁর (স্ত্রী) সঙ্গে যেভাবে আচরণ করা হয়েছিল তাতে রাগ হওয়ার কারণ থাকতে পারে। তবে গায়ে হাত তোলা মেনে নেওয়া যায় না।