ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ২৭টি দেশ ছাড়াও এই তালিকায় আছে যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, রাশিয়া, সুইজারল্যান্ড ও তুরস্ক। এই ৩২টি দেশের বিরুদ্ধে সম্প্রতি মামলা ঠুকে দিয়েছেন ২৪ বছর বয়সী ক্লাউদিয়া, তাঁর ২০ বছর বয়সী ভাই মার্তিম, ১১ বছর বয়সী বোন মারিয়ানা সহ নতুন প্রজন্মের ছয় পর্তুগিজ।
মামলাকারীদের অভিযোগ, উল্লেখিত দেশগুলো জলবায়ু ইস্যুতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছি দেশগুলো তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
বুধবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্ট্রাসবুর্গে অবস্থিত মানবাধিকার বিষয়ক ইউরোপিয়ান আদালতে এ ধরনের মামলা প্রথমবারের মতো নথিভুক্ত করা হয়। মামলাটি সফল হলে জড়িত অভিযুক্ত দেশগুলো কিছু আইনি বাধ্যবাধকতার মুখোমুখি হতে পারে। আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্ট্রাসবুর্গের আদালতে মামলাটির প্রথম শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মামলায় ৬ জলবায়ু কর্মী যুক্তি দিয়েছেন, ২০১৭ সাল থেকে পর্তুগালে প্রতি বছরই বনাঞ্চলে দাবানলের মতো ঘটনা ঘটছে। আর এমনটি হচ্ছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সরাসরি প্রভাবে।
জলবায়ু কর্মীদের অভিযোগ—অভিযুক্ত দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনকে অবজ্ঞা করার কারণে ব্যক্তিগত জীবন, গোপনীয়তা, পারিবারিক জীবন এবং বৈষম্যমুক্ত থাকা সহ তাঁদের মৌলিক অধিকারগুলো লঙ্ঘিত হয়েছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে পর্তুগালে তাঁরা ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য কিছু নেতিবাচক প্রভাবের সম্মুখীন হয়েছেন। বিশেষ করে—তাঁদেরকে আগের চেয়ে বেশি সময় বাড়ির ভেতরে অবস্থান করতে হচ্ছে এবং ঘুম, মনোযোগ ও শরীরচর্চার সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। কেউ কেউ বিষণ্নতা, অ্যালার্জি এবং অ্যাজমার মতো ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছেন।
এসবের বিনিময়ে মামলা করা নতুন প্রজন্মের ছয়জন কোনো আর্থিক ক্ষতিপূরণ চান না। ১১ বছর বয়সী মারিয়ানা বলেন, ‘আমি একটি দূষণমুক্ত সবুজ পৃথিবী চাই। আমি সুস্বাস্থ্য চাই।’
মারিয়ানা আরও বলেন, ‘আমি এই মামলায় অংশগ্রহণ করেছি, কারণ আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে সত্যিই খুব দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।’
এই দলটির সবচেয়ে বেশি বয়স যার সেই ক্লাউদিয়া জানান, ২০১৭ সালে প্রলয়ংকরী একটি দিনে মাথার ওপরে হেলিকপ্টারের শব্দ মারিয়ানা এখনো ভুলতে পারছে না। দাবানল নেভানোর জন্য ওই হেলিকপ্টারগুলো উড়ছিল। সেবার ৫০ হাজার একরেরও বেশি বনভূমি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। আর শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।