গত গ্রীষ্মে আলপাইনের ছোট্ট একটি গ্রামে নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর হাড় খুঁজে পেয়েছে ফরাসি তদন্তকারীরা। সেই শিশুর মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করার কাজও করছেন তারা। স্থানীয় সময় রোববার ফরাসি একজন কৌঁসুলির বরাতে খবরটি দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
মৃত শিশুটির নাম এমিল। আড়াই বছর বয়সী এই শিশু গত বছরের ৮ জুলাই তার দাদা-দাদির সঙ্গে থাকার সময় নিখোঁজ হয়। দুই প্রতিবেশী বিকেলের শেষ দিকে এমিলকে ফরাসি আল্পসের ৪ হাজার ফুট উচ্চতায় লা ভার্নেটের একটি রাস্তায় একা হাঁটতে দেখেছিলেন।
ফরাসি কৌঁসুলি জ্যঁ-লুক ব্লাশো বলেছেন, ‘গত শনিবার পুলিশকে লা ভার্নেটের গ্রামের কাছে হাড়ের সন্ধানের বিষয়ে জানান হয়েছিল। জেনেটিক পরীক্ষা শেষে আজ রোববার তারা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, এগুলো শিশু এমিলের হাড়।’
কৌঁসুলি শিশু এমিলের মৃত্যুর কারণ জানাননি। তবে বলেছেন যে, ফরেনসিক তদন্তকারীরা হাড়গুলো বিশ্লেষণ চালিয়ে যাচ্ছেন। জ্যঁ-লুক ব্লাশো বলেন, যে এলাকায় শিশুটির হাড় পাওয়া গেছে সেখানে বাড়তি তল্লাশি চালানোর জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মামলার সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, এক ভ্রমণকারী আল্পসে হাঁটার সময় একটি দেহাবশেষ খুঁজে পান। সেটাই এমিলের মরদেহ। নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন ছুটিতে দাদা-দাদির সঙ্গে থাকতে এসেছিল এমিল।
সে সময় এমিলের সন্ধানে চালানো হয়েছিল ব্যাপক অভিযান। কয়েক ডজন পুলিশ অফিসার, সৈন্য, উদ্ধারকারী কুকুর, একটি হেলিকপ্টার এবং ড্রোন ছিল সেই অভিযানে। তারপরও এমিলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধান অভিযান শুরুর বেশ কয়েক দিন পর একজন কৌঁসুলি বলেছিলেন যে, গ্রীষ্মের গরমে এমন একটি ছোট শিশুর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম।
নিখোঁজ ব্যক্তির প্রাথমিক তদন্ত এরপর সম্ভাব্য অপহরণের অপরাধমূলক তদন্তে পরিণত হয়। দুর্ঘটনা বা নিচে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায়নি তখন।
গত বৃহস্পতিবার এমিলের দাদা-দাদির গ্রামে পুলিশ এসেছিল। এলাকাটি ঘেরাও করে রহস্য সমাধানের চেষ্টা করার অংশ হিসেবে এমিল নিখোঁজ হওয়ার আগে শেষ মুহূর্তগুলো আবারও পর্যালোচনা করতে এমিলের পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী এবং প্রত্যক্ষদর্শীসহ ১৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ড্রোনও কাজে লাগানো হয়েছিল। তবে তখনো কিছু পাওয়া যায়নি।
এমিলের মা এবং বাবা ধর্মপ্রাণ ক্যাথলিক। এমিল নিখোঁজ হওয়ার দিনে তারা গ্রামটিতে ছিলেন না। তবে গণমাধ্যমের সন্দেহের তালিকায় এমিলের দাদা ছিলেন। এমিলের দাদাকে ১৯৯০ এর দশকের একটি মামলায় একটি বেসরকারি ক্যাথলিক স্কুলে সহিংসতা এবং যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
তবে মামলার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে যে, এমিলের নিখোঁজের সঙ্গে তার দাদার জড়িত থাকার বিষয়টি সব সময় কেবল অনুমান হিসেবেই রয়ে গেছে।