অনলাইন ডেস্ক
আগামী ৪ জুলাই সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম সপ্তাহান্তে গতকাল শনিবার একটি ‘অস্বাভাবিক পদক্ষেপ’ নিয়েছেন। জনসম্পৃক্ততা ঘটতে পারে, এমন সব অনুষ্ঠান থেকে দূরে গিয়ে তিনি কাছের উপদেষ্টাদের সঙ্গে শনিবারটি কাটিয়েছেন। ৪৪ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এই প্রধানমন্ত্রী তাঁর কনজারভেটিভ পার্টি থেকে পার্লামেন্টের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের গণপ্রস্থানের মধ্যেই সহকারী এবং পরিবারের সঙ্গে ব্যক্তিগত সময় কাটিয়েছেন বলে দাবি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির।
মন্ত্রিপরিষদ সদস্য মাইকেল গোভ ও আন্দ্রেয়া লিডসম আসন্ন নির্বাচনে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে নির্বাচনে অংশ না নেওয়া সংসদ সদস্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮-এ। আসন্ন নির্বাচনে টোরি পার্টি বেশ শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। তার মধ্যেই গত শুক্রবার সামাজিক প্ল্যাটফর্মে পদত্যাগের ঘোষণা দেন মাইকেল গোভ।
পদত্যাগের ঘোষণার কিছুক্ষণ আগে ঋষি সুনাকের প্রতি লিডসম বলেন, ‘সতর্ক পর্যবেক্ষণের পর আমি ঠিক করেছি, আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াব না।’
এদিকে, আবাসনবিষয়ক মন্ত্রী গোভ লিখেছেন, ‘রাজনীতিতে কেউ–ই চাকরিজীবী নয়। আমরা স্বেচ্ছাসেবক—যারা স্বেচ্ছায় আমাদের ভাগ্য বেছে নিই এবং কাজ করার সুযোগ পাওয়াও চমৎকার। কিন্তু এমন মুহূর্তও আসে যখন আপনি জানেন, চলে যাওয়ার এটিই সময় এবং নতুন প্রজন্মেরই নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।’
পদত্যাগ করা জ্যেষ্ঠ এমপিদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেসও আছেন।
এই গণপ্রস্থানের মধ্যে প্রচারণা চলাকালীন ছুটির দিনে নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণে উপদেষ্টাদের সঙ্গে ঋষি সুনাকের আলোচনায় সময় ব্যয় করাকে কিছুটা অস্বাভাবিক বলছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। সংবাদমাধ্যমটির উদ্ধৃত একটি সূত্র সুনাকের এই পদক্ষেপকে ‘হাস্যকর’ বলেছে। কারণ, প্রধানমন্ত্রীরা নাকি সাধারণত প্রচারণার প্রথম সপ্তাহান্তে তাঁর উপদেষ্টাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য বাড়িতে সময় কাটান না।
বিরোধী লেবার পার্টির এমপি স্টেলা ক্রিসি সামাজিক প্ল্যাটফর্মে দেওয়া পোস্টে বলেছেন, সুনাকের ইতিমধ্যেই একটি ডুভেট ডের (মানসিক অবসাদ কাটাতে অতিরিক্ত ছুটি) প্রয়োজন। ব্রিটেনেরও এখন একটি ভিন্ন সরকারের প্রয়োজন।
তবে ঋষি সুনাকের ঘরে সময় কাটানোর বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির মন্ত্রী বিম আফোলামি দাবি করেন, সুনাক উত্তর ইংল্যান্ডের নির্বাচনী এলাকা ইয়র্কশায়ারে প্রচারণায় দিন কাটিয়েছেন।
টোরি পার্টির সমালোচনা করাকেই নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল বলে নির্ধারণ করেছেন বিরোধী লেবার পার্টির নেতা কেয়ার স্টার্মার। টোরিদের নেতৃত্বই দেশের অর্থনীতিকে ধসিয়ে দিয়েছে এবং বাড়িয়ে দিয়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়—এসব দাবির ওপর ভিত্তি করেই লেবার নেতা তাঁর যুক্তি সাজিয়েছেন।
গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার পরিচালিত জরিপ দেখায় যে কনজারভেটিভদের পয়েন্ট এক বাড়ায় জনসমর্থন এখন প্রায় ২২ শতাংশ। অন্যদিকে, দুই পয়েন্ট কমার পর লেবার পার্টির সমর্থন প্রায় ৪৪ শতাংশ।