অনলাইন ডেস্ক
রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির দীর্ঘদিনের সহযোগী লিওনিদ ভলকভ লিথুনিয়ায় তার নিজ বাড়ির সমানে হামলার শিকার হয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়েছে হামলাকারীরা। এই হামলার জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দায়ী করছে লিথুয়ানিয়া। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
৪৩ বছর বয়সী লিওনিদ ভলকভ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় টেলিগ্রাম পোস্টে হামলার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘হামলাকারীরা উঠোনে আমাকে আক্রমণ করেছিল। আমার পায়ে প্রায় ১৫ বার আঘাত করেছিল। পা মোটামুটি ঠিক আছে। তবে হাঁটলে ব্যথা অনুভূত হচ্ছে। তবে আমার হাত ভেঙেছে।’
হামলাকারীকে তিনি চেনেন না। কারা তার ওপর হামলা চালিয়েছে বা হামলাকারীরা দেখতে কেমন ছিল সে বিষয়ে কোনো তথ্য তিনি দেননি। তবে তার ওপর এই হামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন ভলকভ।
এ হামলা প্রসঙ্গে লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গিটানাস নৌসেদা বলেছেন, নাভালনির সহযোগীর ওপর হামলাটি পরিষ্কারভাবেই পরিকল্পিত এবং লিথুয়ানিয়ার বিরুদ্ধে অন্যান্য উসকানির সঙ্গে এর যুক্ততা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি (ভ্লাদিমির) পুতিনকে শুধুমাত্র একটি কথাই বলতে পারি, এখানে কেউ আপনাকে ভয় পায় না।’
লিথুয়ানিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিভাগ বলেছে যে, রাশিয়ায় এই সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধীরা যাতে প্রভাব ফেলতে না পারে সে জন্যই সম্ভবত মস্কো এই হামলা করেছে।
বিবিসি বলেছে, যখন হামলার হয় তখন ভলকভ গাড়ি করে ভিলনিয়াসে তার বাড়িতে ফিরছিলেন। পুলিশ এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে।
নাভালনির আরেক সহযোগী ইভান জাদানভ সামাজিক প্ল্যাটফর্মে ভলকভের কিছু ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে দেখা গেছে, ভলকভের বাঁ পায়ের নিচের অংশ রক্তাক্ত হয়ে আছে। আঘাতের চিহ্ন রয়েছে তাঁর কপালেও। জাদানভ বলেন, ‘নীরবে ঘটেছে এই হামলা। এটা যে রাজনৈতিক হামলা, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’
ভলকভের স্ত্রী জানিয়েছেন, তার স্বামী ভাঙা হাত নিয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরেছেন। এমনকি তার পায়ে এত বার হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে যে, তিনি হাঁটতেও পারছিলেন না।
নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা মাথা রেখে গত কয়েক বছর ধরে রাশিয়ার বাইরে বসবাস করছেন লিওনিদ ভলকভ। নাভালনির মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার চিফ-অব-স্টাফের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সাইবেরিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল ইয়ামালো-নেনেতের আর্কটিক পেনাল কলোনিতে বন্দী অবস্থায় পুতিন সমালোচক ও বিরোধী দলের নেতা নাভালনির মৃত্যু হয়। কারা কর্তৃপক্ষ তার স্বাভাবিক মৃত্যুর দাবি করলেও তার পরিবার এবং সমর্থকদের ধারণা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশেই হত্যা করা হয়েছে নাভালনিকে।