ভারতের বিহার রাজ্যের বৈশালী জেলায় একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রার মধ্যে একটি দ্রুতগামী ট্রাক ঢুকে পড়েছে। এতে শিশুসহ অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, গতকাল রোববার রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পাটনা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের দেসরি থানা এলাকায় মাহনার-হাজিপুর মহাসড়কে এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। রোববার রাত ৯টার দিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি দল স্থানীয় দেবতা ‘ভূমি বাবার’ কাছে প্রার্থনা করার জন্য রাস্তার পাশে একটি পিপল গাছের নিচে জড়ো হচ্ছিলেন। তখন এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ দুর্ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন এবং প্রতিটি নিহতের পরিবারকে ২ লাখ রুপি এবং আহত প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ৫০ হাজার রুপি ঘোষণা করেছেন। এক টুইটার পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘বিহারের বৈশালীর দুর্ঘটনাটি দুঃখজনক। শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানাই। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক।’
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এ ধরনের দুর্ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।’
রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) বিধায়ক মুকেশ রৌশন দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন। তিনি বলেছেন, ‘অন্তত ৯ জন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। আহতদের হাজিপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালে যাওয়ার পথে তিনজন মারা গেছেন। যাদের অবস্থা বেশি আশঙ্কাজনক, তাদের পাটনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
বৈশালীর পুলিশ সুপার মনীশ কুমার বলেছেন, ‘বিয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ধরনের প্রার্থনা করতে পুণ্যার্থীরা বের হয়েছিলেন। কারণ পার্শ্ববর্তী সুলতানপুর গ্রামের এক বাসিন্দার বাড়িতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল।’
নিহতদের মধ্যে অন্তত চারজন শিশু রয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন। এ ছাড়া পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। অনেকেই বলেছেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে অনেক দেরি করেছে। বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগানও দিয়েছে।
এসপি মনীশ কুমার বলেছেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং উদ্ধারকাজের গতি বাড়াতে আশপাশের বেশ কয়েকটি থানা থেকে কর্মী পাঠাতে বলেছি।’
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার দুর্ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন।