১৯৫৬ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন প্রণীত হওয়ার আগে বাবা মরে গেলে মেয়েরা তাঁর সম্পত্তির ভাগ পাবেন না বলে রায় দিয়েছেন ভারতের মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট। ১৭ বছর ধরে ঝুলে থাকা এক রিট মামলা নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এ এস চান্দুরকর ও জিতেন্দ্র জৈনের বেঞ্চ গতকাল বুধবার এই রায় দেয়।
১৯৫২ সালে মৃত যশবন্তরাও নামে এক ব্যক্তির দুই স্ত্রী ও তিন কন্যাকে জড়িয়ে মামলাটির সূত্রপাত হয়। যশবন্তরাওয়ের প্রথম স্ত্রী লক্ষ্মীবাই ১৯৩০ সালে মারা যান। এরপর তিনি ভিকুবাইকে বিয়ে করেন। পরে যশবন্তের অর্ধেক সম্পত্তি দাবি করে প্রথম স্ত্রীর মেয়ে রাধাবাই দেওয়ানি মামলা করেন।
ওই মামলায় দেওয়ানি আদালতের রায়ে রাধাবাইয়ের দাবি খারিজ করা হয়। সেখানে বলা হয়, ১৯৩৭ সালের হিন্দু নারীর সম্পত্তির অধিকার আইন অনুযায়ী যশবন্তরাওয়ের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ভিকুবাই। ১৯৫৬ সালের হিন্দু উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী সম্পত্তির একচ্ছত্র মালিকও হন তিনি।
হাইকোর্টের রায়ে বিচারকরা বলেন, বাবার মৃত্যুর পর বিধবা মা ছাড়া আর কেউ না থাকলে সম্পত্তিতে মেয়ের উত্তরাধিকার থাকবে কি না— সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে তাঁরা ১৯৫৬ সালের আগের উত্তরাধিকার নিয়ে আইনগুলো বিবেচনায় নিয়েছেন।
আদালত জানিয়েছেন, যেহেতু মামলায় উল্লেখিত ব্যক্তি ১৯৫৬ সালের উত্তরাধিকার আইন কার্যকর হওয়ার আগে মারা যান, সেহেতু তাঁর সম্পত্তি তখনকার প্রচলিত আইন অনুসারেই বণ্টিত হবে। কিন্তু তখন আইনে মেয়েরা ‘উত্তরাধিকারী’ স্বীকৃত ছিল না।
আদালত বলেন, ১৯৩৭ সালের হিন্দু নারীর সম্পত্তির অধিকার আইনে মেয়েদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার দেওয়া হয়নি। সেখানে স্পষ্টভাবে ‘ছেলে সন্তানদের’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আইনপ্রণেতারা যদি ‘মেয়ে সন্তানদের’ জন্য এই অধিকার চাইতেন, তবে তা আইনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকত।
বিচারকরা আরও বলেন, পরে ১৯৫৬ সালে প্রণীত হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে মেয়েদের প্রথম শ্রেণির উত্তরাধিকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু তা পূর্ববর্তী সময়ের জন্য প্রযোজ্য হবে না। কারণ, কোনো আইন প্রণীত হওয়ার আগের ঘটনার বিচার, সেই আইনে করা যায় না।