হোম > বিশ্ব > ভারত

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন

ভারতের পুনেতে অস্বাভাবিক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ছে গুলেন-ব্যারি সিনড্রোম

ভারতের জনপ্রিয় পর্যটন শহর পুনে। ছবি: এএফপি

গুলেন-ব্যারি সিনড্রোম হলো একধরনের বিরল স্নায়বিক রোগ বা অটোইমিউন ডিজঅর্ডার। সাধারণত আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেম অ্যান্টিবডি নিঃসরণ করে শত্রুকে মোকাবিলা করে। কিন্তু কেউ অটোইমিউন ডিজিজে বা জিবিএসে আক্রান্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা নিজ থেকেই ভুল করতে থাকে। তখন ইমিউন সিস্টেম শত্রু ও সুস্থ কোষের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে পারে না। ফলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ভুলে উল্টো শরীরের সুস্থ কোষ ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে আক্রমণ করতে থাকে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির পেশির দুর্বলতা, এমনকি কখনো কখনো পক্ষাঘাত হতেও দেখা যায়।

সম্প্রতি ভারতের পুনে শহরে এই বিরল স্নায়বিক রোগ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংক্রমণ রোগ পর্যবেক্ষণ বিভাগ (আইডিএসপি) জানিয়েছে, গত এক মাসে ১৮০টি সন্দেহভাজন কেসের মধ্যে ১৫৫ জনের গুলেন-ব্যারি সিনড্রোম বা জিবিএস সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়েছে।

পুনেতে এখন পর্যন্ত ৬ জন মারা গেছে, যাদের মধ্যে একজনের শরীরে জিবিএসের সংক্রমণ ছিল। এ ছাড়া ৪৭ জন আইসিইউতে এবং ২১ জনকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, ক্যাম্পাইলোব্যাকটার জেজুনি নামের একধরনের পানিবাহিত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে এই রোগ ছড়িয়েছে। শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ৫৫টি পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তাতে ক্যাম্পাইলোব্যাকটার জেজুনি ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে।

সাধারণত দূষিত খাদ্য ও পানি; যেমন কম রান্না করা মুরগি, পাস্তুরিত দুধ ও দূষিত পানির মাধ্যমে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়।

পুনের সাহ্যাদ্রি হাসপাতালের নিউরোলজিস্ট আরাধনা চৌহান বলেছেন, ‘আমাদের বেশির ভাগ জিবিএস রোগী সংক্রমণের আগে ডায়রিয়ায় ভুগেছে। অর্থাৎ রোগটি মূলত পানিবাহিত জীবাণুর মাধ্যমে ছড়াচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুনেতে জিবিএস সংক্রমণের হার স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। সাধারণত ৭০ লাখ জনসংখ্যার শহরে বছরে ১৪০টি জিবিএস কেস হতে পারে। কিন্তু পুনেতে এবার এক মাসেই ১৫৫ জন আক্রান্ত হয়েছে।

মার্কিন সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে ১ থেকে ২ জন জিবিএসে আক্রান্ত হন। কিন্তু পুনেতে এর অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃদ্ধি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে পুনেতে এক বছরে তিনটি বড় ধরনের রোগের প্রকোপ দেখা গেছে। ২০২৪ সালে জিকা ভাইরাস ও চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়ার পর এবার জিবিএসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একাধিক রোগজীবাণুর সংক্রমণ এই সংকট আরও বাড়িয়ে তুলছে।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক কার্লোস পার্ডো-ভিলামিজার বলেছেন, ‘এই সংক্রমণের পেছনে শুধু ক্যাম্পাইলোব্যাকটার নয়, আরও অন্যান্য জীবাণুরও ভূমিকা থাকতে পারে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত নগরায়ণের ফলে পুনের মতো শহরগুলোর মৌলিক অবকাঠামো উন্নত হয়নি। এই জিবিএস আক্রান্তদের অর্ধেকই শহরের নতুন মানুষ, যেখানে পরিষ্কার পানির অভাব রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে পুনের শহর কর্তৃপক্ষ, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগ আক্রান্তদের শনাক্ত ও চিকিৎসার উদ্যোগ নিচ্ছে; পাশাপাশি পানি বিশুদ্ধকরণ ও স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এশিয়ার মধ্যে ভারতে পুনেতে জিবিএসের এমন ভয়ানক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এর আগে দক্ষিণ আমেরিকায় জিবিএসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল।

‘হিন্দু রাষ্ট্র’ সংবিধানে থাকতে হবে না, এটি সূর্যোদয়ের মতোই সত্য: আরএসএস প্রধান

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

ভারতে নিকাব বিতর্ক: কাজে যোগ দেননি সেই নারী চিকিৎসক

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

কুয়াশার কারণে পশ্চিমবঙ্গের জনসভায় গেলেন না নরেন্দ্র মোদি

আসামে মধ্যরাতে ট্রেনের ধাক্কায় ৭ হাতির মৃত্যু, রক্ষা পেলেন যাত্রীরা

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

ভারতীয়দের বিরুদ্ধে এইচ-১বি ভিসায় ব্যাপক জালিয়াতি ও ঘুষের অভিযোগ

বর্তমান বাংলাদেশ একাত্তরের পর সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ: ভারতের সংসদীয় কমিটি