ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের আলিগড়ে একটি রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সেহরির জন্য অপেক্ষারত এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে চার দুষ্কৃতকারী। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে আলিগড়ের রোরাভার তেলিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত ব্যক্তির নাম হারিস ওরফে কাট্টা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সিসিটিভি ফুটেজের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, হারিস ওরফে কাট্টা ক্রিকেট ম্যাচ খেলে বাড়িতে ফিরেছিলেন সেহরির ঠিক আগে। তিনি রাত ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে তাঁর বাড়ির সামনে আরেক ব্যক্তির সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিছুক্ষণ পর ওই ব্যক্তি একটি উঁচু স্থানে বসে পড়েন। এ সময় হারিস লক্ষ করেন, দুটি মোটরসাইকেল তাঁর পাশে এসে থামছে।
কাছাকাছি থাকা মোটরসাইকেলের পেছনের আরোহী যখন পিস্তল তাক করেন, তখন হারিস নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেন। কিন্তু চলন্ত অবস্থায়ই প্রথম গুলিটি তাঁকে বিদ্ধ করে। এরপর ওই বন্দুকধারী দ্রুত আরও দুটি গুলি চালায়। এতে হারিস মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং তাঁর সঙ্গী দৌড়ে পালিয়ে যান। বন্দুকধারী এরপর পড়ে থাকা হারিসকে আরেকটি গুলি করেন নেমে। এরপর হারিস মারা গেছেন—এটি নিশ্চিত হয়ে মোটরসাইকেলে উঠে চলে যান।
এ সময় দ্বিতীয় মোটরসাইকেলের পেছনের আরোহী নেমে হারিসের দিকে এগিয়ে যান। তিনি গুলি চালাতে গিয়ে দেখেন, বন্দুকটি কক করা হয়নি। সেটি ঠিক করার পর তিনি হারিসের দেহে আরও তিনটি গুলি চালান, তারপর বাইকে উঠে পড়েন। দুটি মোটরসাইকেলই দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। ভিডিওটির শেষ অংশে দেখা যায়, হারিস রাস্তায় পড়ে আছেন, আর একজন ব্যক্তি বাইকগুলোর পেছনে দৌড়াচ্ছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, হারিসের শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোল উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। তবে, অন্যান্য দিকও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
হারিসের আত্মীয় শোয়েব জানান, ‘হারিস আমার ছোট ভাইয়ের মতো ছিল। আমাদের কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না। সেহরির জন্য অপেক্ষা করছিলাম, তখনই এ ঘটনা ঘটে। আমরা দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মায়াঙ্ক পাঠক বলেন, ‘রাত সাড়ে ৩টা নাগাদ আমরা গুলির খবর পাই। হারিসকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। একটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।’ পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্তে একাধিক দল গঠন করা হয়েছে। খুব শিগগিরই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে।