ভারতে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ইতিহাস পুরোনো। এ নিয়ে এ যাবত কম সংঘাত হয়নি। সেই পুরোনো ক্ষত আবার জাগিয়ে তুলেছে বিজেপি সরকার। তাঁরা হিন্দিকে সব রাজ্যের অফিসিয়াল ভাষা করতে চান। বরাবরের মতো এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তামিলনাড়ু সরকার। সেই উত্তেজনায় ঘি ঢেলেছেন মিউজিক মায়েস্ত্রো এ আর রহমান।
বিতর্কটার শুরু করেছে মূলত তামিলনাড়ুর প্রধান বিরোধী দল এআইএডিএমকে। আজ শনিবার দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—কেউ হিন্দি শিখতে চাইলে তাঁর ইচ্ছায় শিখবেন। জোর করে চাপিয়ে দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
এর মধ্যে এ আর রহমান একটি ছবিসহ তামিল ভাষার একটি পোস্টার টুইটারে পোস্ট করেছেন। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
এআইএডিএমকে শীর্ষ নেতা ও পনিরসেলভাম প্রয়াত দ্রাবিড় আইকন সি এন আন্নাদুরির উদ্ধৃতি দিয়ে টুইটারে বলেছেন, যদি প্রয়োজন হয় তবে মানুষ স্বেচ্ছায় হিন্দি শিখবেন। কিন্তু হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।
সাবেক এ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর দল তামিল এবং ইংরেজি এই দুই ভাষাকে অফিসিয়াল ভাষা রাখার পক্ষে অনড় থাকবে। আন্নাদুরাইয়ের আদর্শ থেকে একচুল নড়বে না। স্টপ হিন্দি ইমপোজিশন হ্যাশট্যাগও ব্যবহার করেছেন তিনি।
এর মধ্যে এ আর রহমানের টুইটকে অনেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করছেন। গত ৭ এপ্রিল অমিত শাহ বলেন, ইংরেজি বা স্থানীয় ভাষার বিকল্প হিসেবে হিন্দিকে গ্রহণ করা উচিত। এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন বলেছেন, এমন সিদ্ধান্ত জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করবে।
এ আর রহমান যে ছবিটি শেয়ার করেছেন সেটির সঙ্গে ক্যাপশনে লিখেছেন ‘তামিঝানাংগু’। স্পষ্টত তামিল মাতা গানের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন তিনি।
ছবিটির নিচে ফুটনোটে যে লাইনটি রয়েছে সেটি জনপ্রিয় তামিল জাতীয়তাবাদী কবি বারাথিদাসানের চরণ। সাদা শাড়ি পরা এক নারীর প্রতিকৃতি যে তামিল মাতার স্পষ্ট প্রতীক এবং হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ তা বুঝতে কারও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিল্লিতে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্টারি অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ কমিটির ৩৭তম সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশের অফিসিয়াল ভাষায় সরকার পরিচালনা করতে হবে। এতে করে অবশ্যই হিন্দির গুরুত্ব বাড়বে।