ভারতের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে ভুল ভবিষ্যদ্বাণী করায় গত কয়েক দিন ধরেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ভোট কুশলী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া প্রশান্ত কিশোর। শুক্রবার নিজের ভুল স্বীকার করেছেন তিনি। জানিয়েছেন,ভবিষ্যতে আর কখনোই নির্বাচনের আসনসংখ্যা নিয়ে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করবেন না।
আউটলুক ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে নিজের ভুলের কথা স্বীকার করেন প্রশান্ত। তিনি বলেন, ‘হ্যা, আমি এবং আমার মতো বিশ্লেষকেরা ভুল ধারণা করেছি। এখন আমরা অপমানের রুটি খেতে প্রস্তুত।’
এ সময় ভবিষ্যতের নির্বাচনগুলোতে সংখ্যার ভবিষ্যদ্বাণী চালিয়ে যাবেন কি-না, কিশোরের কাছে জানতে চান সঞ্চালক। এর জবাবে কিশোর বলেন, ‘না, আমি আর কোনো নির্বাচনে আসনসংখ্যার মধ্যে মাথা ঢোকাব না।’
সাত ধাপে প্রায় দেড় মাসজুড়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। এর মধ্যে পঞ্চম ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হতেই প্রশান্ত কিশোর ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন—২০১৯ সালের নির্বাচনী ফলাফলের পুনরাবৃত্তি ঘটবে এবারও। সেবার লোকসভায় ৩০৩টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু এবারের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, আসনসংখ্যায় গত বারের ধারে কাছেও যেতে পারেনি নরেন্দ্র মোদির দল। এমনকি, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের ক্ষেত্রে ৫৩টি আসন কম ছিল দলটির।
এই বিষয়ে টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত কিশোর বলেন, ‘আমি আমার মূল্যায়ন আপনাদের কাছে রেখেছিলাম এবং আমাকে এখন ক্যামেরার সামনে স্বীকার করতে হচ্ছে যে, আমি যে মূল্যায়ন করেছি তা সংখ্যার দিক থেকে ২০ শতাংশ ভুল ছিল। আমি বলছিলাম বিজেপি ৩০০ আসনের কাছাকাছি পাবে এবং তারা ২৪০ পেয়েছে। তবে আমি আগেই বলেছিলাম, নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে দেশে কিছু ক্ষোভ থাকলেও বড় অসন্তোষ ছিল না।’
এদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা ফল নিয়েও ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। দাবি করেছিলেন এই রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে গতবার পাওয়া ১৮ আসন ছাড়িয়ে যাবে বিজেপি। শুধু তাই নয়, রাজ্যটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে এক নম্বর অবস্থানে থাকবে দলটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গে মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস একাই পেয়েছে ২৯টি আসন। আর বিজেপি পেয়েছে মাত্র ১২টি আসন পেয়েছে।
এর ফলে পশ্চিমবঙ্গেও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন কিশোর। ভারতের উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থান নিয়েও তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী ভুল প্রমাণিত হয়েছে।