অনলাইন ডেস্ক
মাত্রই মাসখানিক আগে হিজাব বিতর্ক নিয়ে উত্তাল ছিল ভারতের কর্ণাটক। ব্যাপারটি শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। সেই বিতর্কের রেশ এখনো না কাটতেই নতুন করে বোরকা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে কর্ণাটকে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বোরকা পরে আসায় এই এলাকার এক স্কুলছাত্রীকে পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা দিতে কর্ণাটকের হুবলি জেলার একটি কেন্দ্রে বোরকা পরে প্রবেশ করেছিল এক ছাত্রী। তাকে বলা হয় পোশাক পরিবর্তন করে এসে পরীক্ষায় বসতে। পোশাক পাল্টানোর জন্য কর্তৃপক্ষ তাকে অতিরিক্ত সময়ও দেয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে পোশাক পরিবর্তন করে আসার পর ওই ছাত্রীকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়।
একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা ধারওয়াদ মোহন কুমার বলেছেন, ‘ওই ছাত্রী সিভিল ড্রেসে পরীক্ষা দিতে এসেছিল। সে ‘ড্রেস কোড’ না মেনে বোরকা পরে এসেছিল। আমরা তাকে বোঝালাম যে তাকে উচ্চ আদালতের আদেশ মানতে হবে। সে আমাদের কথা শুনেছে এবং পোশাক পরিবর্তন করে এসে পরীক্ষা দিয়েছে।’
এদিকে বাগালকোটের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। সেখানেও বোরকা পরে আসা এক ছাত্রীকে পোশাক পরিবর্তন করে আসার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নির্দেশ পালন করেনি ওই ছাত্রী। এমনকি সে পরীক্ষা না দিয়েই ফিরে গেছে।
গতকাল সোমবার থেকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বোর্ড পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কর্ণাটকে ৮ লাখ ৭৪ হাজার শিক্ষার্থী এ বছর দশম শ্রেণির পরীক্ষায় বসেছে। পরীক্ষা শুরুর আগে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্র বলেছেন, ‘হিজাবের ব্যাপারে আদালতের যে নির্দেশনা রয়েছে তা না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার এ বিষয়ে কোনো আপস করবে না। পরীক্ষা দিতে হলে হিজাব খুলেই দিতে হবে।’
এর আগে এ মাসের শুরুর দিকে এক রায়ে কর্ণাটক হাইকোর্ট বলেছিলেন, ধর্মীয় কারণে হিজাব অপরিহার্য নয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকেই তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ড্রেস কোড (নির্ধারিত পোশাক) মেনে চলতে হবে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি কর্ণাটক সরকার হিজাব ও ওড়না নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। তারপর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল শিক্ষার্থীরা। ১১ দিন শুনানির পর কর্ণাটক হাইকোর্ট জানিয়ে দেন, হিজাব মোটেই অপরিহার্য নয়। তাই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকছে। একই সঙ্গে হিজাবের পক্ষে দাখিল করা পাঁচটি মামলাও খারিজ করে দেন আদালত।