‘মোদি নামের লোকেরা চোর হয় কেন’—এমন মন্তব্যে মানহানির দায়ে দণ্ডিত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি স্থগিত করেছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।
একই সঙ্গে মামলার বাদী বিজেপির সংসদ সদস্য পুর্নেশ মোদিকে তলব করেছে আদালত। তাঁকে আগামী ৪ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন হাজির হতে হবে।
রাহুল গান্ধী নির্বাচন করতে পারবে কি না—ওই দিন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এক নির্বাচনী প্রচারণায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি নিয়ে মন্তব্য করায় মানহানির দায়ে রাহুলের দুই বছরের কারাদণ্ড হয়। নিম্ন আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল চলতি মাসের শুরুতে গুজরাটের হাইকোর্ট খারিজ করে দেন।
দণ্ডিত হওয়ায় আইন অনুযায়ী লোকসভার সদস্য পদ হারিয়েছেন রাহুল। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী, কোনো মামলায় দুই বছর বা তার বেশি মেয়াদে কেউ দণ্ডিত হলে তাঁর লোকসভার সদস্য পদ থাকবে না। তবে, সর্বোচ্চ আদালতের রায় রাহুলের পক্ষে গেলে তিনি তা ফিরে পাবেন।
আদালতের রায়ে রাহুল পদ হারালেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এই রায়ের পেছনে প্রভাব খাটিয়েছে বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি বলছে, যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই রায় হয়েছে।
২০১৯ সালে কর্ণাটকে রাজনৈতিক প্রচারণায় গিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘সব চোরের ডাক নাম মোদি হয় কেন? নিরব মোদি, লোলিত মোদি, নরেদ্র মোদি।’ এই মন্তব্যের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়।
ভারতীয় হীরা ব্যবসায়ী নিরব মোদি ভারতে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে এখন পলাতক রয়েছেন। আর ললিত মোদি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সাবেক প্রধান। দুর্নীতির জন্য তিনি ভারতীয় ক্রিকেট থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ।
মানহানির মামলায় পুর্নেশ মোদি অভিযোগ করেছেন, রাহুল গান্ধীর মন্তব্য পুরো মোদি সম্প্রদায়কে অপমান করেছেন। যদিও মোদি নাম দিয়ে কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায় বা জাতি বুঝায় না। রাজস্থান, গুজরাট, বিহার, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড ও উত্তর প্রদেশের লোকেরা এই নাম ব্যবহার করে।
তবে এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন রাহুল গান্ধী। তাঁর ভাষ্য, ‘আমি শুধু দুর্নীতির মারাত্মক পরিস্থিতি বোঝাতে ওই শব্দ ব্যবহার করেছি, কোনো সম্প্রদায়কে আঘাত করতে নয়।’
রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের জন্য রাহুল সাজা স্থগিতের আবেদন করলে নিম্ন আদালত তাঁকে জামিন দেন। সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত সমস্ত আইনি পদক্ষেপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। এখন যদি রায় স্থগিত হয়, তাহলে তিনি লোকসভার সদস্যপদ ফিরে পাবেন।