বেঙ্গালুরুর সিদ্ধগঙ্গা মঠের বিখ্যাত লিঙ্গায়েত সন্ন্যাসী শিবকুমার স্বামীর মূর্তি বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আটকের পর অভিযুক্তের দাবি, যিশুখ্রিষ্টের আদেশ পেয়ে এ কাজ করেছেন তিনি।
গত ৩০ নভেম্বর রাত দেড়টার দিকে বেঙ্গালুরুর বীরভদ্র নগরে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সী শ্রীকৃষ্ণ পেশায় ডেলিভারি কর্মী।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, শ্রীকৃষ্ণ মূর্তির মুখের কিছু অংশ নষ্ট করে চলে যান। পরদিন সকালে স্থানীয়রা মূর্তির মুখটি বিকৃত অবস্থায় দেখতে পান।
ভাঙা মূর্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। স্থানীয়রা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। পুলিশ শ্রীকৃষ্ণকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে তাঁকে বিচারিক হেফাজতে পাঠান আদালত।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দাবি করেন, তিনি যিশুখ্রিষ্টের পরম ভক্ত। স্বপ্নে যিশুখ্রিষ্ট তাঁকে লিঙ্গায়েত ধর্মগুরুর মূর্তি ভাঙতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।
শ্রীকৃষ্ণের বক্তব্যকে ‘অযৌক্তিক ও নিন্দনীয়’ বলে অভিহিত করে বেঙ্গালুরুর আর্চবিশপ ড. পিটার মাচাডো সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার ফাঁদে না পড়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, এ ধরনের বক্তব্য শুধু সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও অসন্তোষ ছড়ানোর জন্য। সন্ন্যাসী শিবকুমার স্বামীর মতো শান্তি, করুণা ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীককে অসম্মান করা অগ্রহণযোগ্য।
ভারতে চলমান হিন্দু-মুসলিম উত্তেজনার উত্তাপ বাড়াতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযুক্ত এ কাজ করেছেন, নাকি তাঁর মানসিক সমস্যা রয়েছে—এটি যাচাই করতে মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসী শিবকুমার স্বামীকে বলা হতো ‘সাক্ষাৎ দেবতা’। গরিবদের খাবার বিতরণে এবং শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়াসহ নানা জনহিতকর কাজের জন্য পরিচিত ছিলেন। ২০১৯ সালে ১১১ বছর বয়সে মারা যান তিনি।