চার দিনের দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে উৎসবে মেতে উঠেছে দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা হিন্দু বাঙালিরা। দুর্গা পূজার প্রতিমা নির্মাণকে ঘিরে সাবেক বাংলাদেশি বা ‘বাঙাল’ এবং পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় বা ‘ঘটি’দের লড়াই এখনো জারি রয়েছে। কলকাতায় মূর্তি তৈরির প্রধান কেন্দ্র কুমোরটুলিতে সাবেক পূর্ব পাকিস্তান বা বর্তমান বাংলাদেশ থেকে আসা শিল্পীদের সঙ্গে নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের শিল্পীদের বিভাজন রেখা স্পষ্ট।
কুমোরটুলির ঘটি বা স্থানীয় শিল্পীরা কলকাতার পূজা মণ্ডপগুলোতে থিম বা ভাবনাকেন্দ্রিক আধুনিক দুর্গা প্রতিমা বানিয়ে আজও চমক দেখান। আর বাঙাল শিল্পীরা পুরোনো ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখনো ভারত সেরা। উভয়ের প্রতিমাই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাড়ি দেয়। উভয় শিবিরেই রয়েছেন পরিমল পাল, দীপঙ্কর পাল, নবকুমার পাল, মলয় পাল থেকে শুরু করে রাখাল পাল, নেপাল পাল, মোহন বাঁশি রুদ্রপাল, সনাতন রুদ্রপালদের মতো নামী মৃৎশিল্পীরা।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সময় থেকেই কুমোরটুলি বেশ জমজমাট। শোভাবাজারের মহারাজা নবকৃষ্ণের অনুরোধে কৃষ্ণনগরের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র মৃৎশিল্পীদের পাঠিয়েছিলেন কলকাতায়। তারপর বাংলাদেশ থেকেও শিল্পীরা এসে যোগ দেন এই কুমোরপাড়ায়। সেই থেকে বাঙাল-ঘটির মধ্যে প্রতিমা নির্মাণ নিয়ে শৈল্পিক বিভাজন থাকলেও অশান্তি নেই বিন্দুমাত্র। তবে উভয় শিবিরের সংগঠন আলাদা। ঘটিদের সংগঠনের নাম ‘কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সাংস্কৃতিক সমিতি’ আর বাঙালদের সমিতির নাম ‘কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সমিতি’। অবশ্য ঘটিদের সমিতি ভেঙে তৈরি হয়েছে তৃতীয় আরও একটি সংগঠন ‘প্রগতিশীল মৃৎশিল্প ও সাজ শিল্প সমিতি’।