অনলাইন ডেস্ক
১৯৮৮ সালে রুশদির দ্য স্যাটানিক ভার্সেস প্রকাশিত হওয়ার পর মুসলিম সম্প্রদায় বইটিকে ধর্মবিরোধী আখ্যা দেয়। এই বই প্রকাশের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ হয় ভারতেও। পরে ওই বছরই ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস সরকার স্যাটানিক ভার্সেস বইটিকে ভারতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বইটি বাইরে থেকে আমদানিতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
শুক্রবার বিবিসি জানিয়েছে, স্যাটানিক ভার্সের বইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞাটি ভারতে নতুন করে আলোচনায় আসে ২০১৭ সালে। সেই বছর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা সন্দীপন খান বইটি কিনতে গিয়ে জানতে পারেন যে এটি ভারতে প্রকাশিত হয়নি এবং আমদানিও সম্ভব নয়। পরে তিনি দেশের তথ্য অধিকার (আরটিআই) আইনের আওতায় এই নিষেধাজ্ঞার নথিটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ঘুরেও এর হদিস পাওয়া যায়নি।
এ অবস্থায় ২০১৯ সালে দিল্লি হাইকোর্টে বইটির নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলা করেন সন্দীপন। তিনি যুক্তি দেখান, এই নিষেধাজ্ঞা তার বই পড়ার স্বাধীনতাকে খর্ব করে।
এদিকে মামলাটির কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে দেখা যায়, গত পাঁচ বছর ধরে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারি কর্তৃপক্ষ বইটির নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত মূল বিজ্ঞপ্তিটি আদালতকে দেখাতে পারেনি। এ অবস্থায় বিচারপতি রেখা পাতিল ও বিচারপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, নিষেধাজ্ঞার মূল বিবৃতি ছাড়া এই মামলায় এগোনোর কোনো অর্থ নেই।
বাদী সন্দীপন খানকে শেষ পর্যন্ত বইটি দেশে আনার অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট। এর ফলে বইটির ওপর ভারতের আরোপিত দীর্ঘ ৩৬ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ সালমান রুশদির পঞ্চম উপন্যাস। ১৯৮৮ সালে বইটি প্রকাশের পর ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি লেখক রুশদিকে হত্যা করার ফতোয়া জারি করেছিলেন।