সম্প্রতি সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে নাবিকসহ মাল্টার পতাকাবাহী একটি বাণিজ্যিক জাহাজ উদ্ধার করেছে ভারতের নৌবাহিনী। এই অভিযানে জাহাজে থাকা ৩৫ জলদস্যুকেও আটক করেছে তারা। ওই জলদস্যুদের এবার ভারতে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে আজ বুধবার দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধরা পড়া জলদস্যুদের নিয়ে আগামী শনিবার (২৩ মার্চ) ভারতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। পরে তাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন এক নৌ কর্মকর্তা। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নিজের পরিচয় গোপন রেখেছেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শনিবার (১৬ মার্চ) মাল্টার পতাকাবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি রুয়েনকে মুক্ত করতে সক্ষম হয় ভারতীয় নৌবাহিনীর কমান্ডোরা। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর আরব সাগর থেকে ওই জাহাজটিকে ছিনতাই করেছিল সোমালি জলদস্যুরা।
২০১৭ সালের পর এমভি রুয়েনই ছিল সোমালি জলদস্যুদের দ্বারা ছিনতাই হওয়া প্রথম কোনো জাহাজ। এর আগে ২০১১ সালে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক জাহাজ ছিনতাই করে মুক্তিপণ দাবি করেছিল সোমালি জলদস্যুরা। সেই সময়গুলোতেও ভারতের নৌবাহিনী বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে আটক জলদস্যুদের বিচার করে কারাগারেও পাঠিয়েছে তারা। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিভিন্ন অভিযানে ধরা পড়া জলদস্যুদের সাধারণত সমুদ্রের মাঝখানে তারা ছেড়ে দিয়েছে। সর্বশেষ আটকের ঘটনায় জলদস্যুদের আবারও বিচারের মুখোমুখি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ডিসেম্বর থেকে এডেন উপসাগর এবং উত্তর আরব সাগরে কমপক্ষে এক ডজন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ভারত। এই জাহাজগুলো লোহিত সাগরের পূর্ব প্রান্তের জাহাজগুলোকেও সহায়তা দিতে সক্ষম। বর্তমানে হুতি বিদ্রোহীদের হুমকিতে থাকা ওই অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের নৌবাহিনী বাণিজ্যিক জাহাজের চলাচলকে নিরাপদ করার চেষ্টা করছে।
ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, সম্প্রতি উদ্ধার করা জাহাজ রুয়েনকে নিজেদের ‘মাদার জাহাজে’ পরিণত করেছিল জলদস্যুরা। এই জাহাজে চড়ে তারা অন্য জাহাজে হামলা চালাতে শুরু করেছিল।
এদিকে সম্প্রতি এমভি আবদুল্লাহ নামে বাংলাদেশি পতাকাবাহী একটি বাণিজ্যিক জাহাজও ছিনতাই করেছে সোমালি জলদস্যুরা। জাহাজটি উদ্ধারের জন্য ১৮ মার্চ বিদেশি নৌবাহিনীগুলোর সঙ্গে এক হয়ে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেছিল সোমালিয়ার একটি স্থানীয় পুলিশ বাহিনী। যদিও জাহাজের মালিকপক্ষ এ ধরনের অভিযানের বিষয়ে কোনো সম্মতি প্রদান করেনি।