কলকাতা প্রতিনিধি
ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্যপাল বা গভর্নর পদ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তুঙ্গে। বিজেপি-শাসিত নয় এমন রাজ্যগুলোতে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরোধ বাড়ছে। সংবিধান অনুসারে রাজ্যপাল রাজ্যের প্রধান। অনেকটা কেন্দ্রীয় স্তরে রাষ্ট্রপতির মতো দায়িত্ব তাঁর। কেন্দ্রীয় সরকার তার পছন্দের মানুষকে রাজ্যপাল হিসেবে মনোনীত করে। প্রোটোকলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীরও ওপরে। তবে সম্প্রতি রাজ্যপাল পদ নিয়ে দেশটির একাধিক রাজ্যে বিতর্ক তুঙ্গে।
পশ্চিমবঙ্গে ভারতের বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় রাজ্যপাল থাকাকালে বিতর্ক চরমে পৌঁছেছিল। তবে বর্তমান রাজ্যপালের আমলে বিতর্ক অনেকটাই কম। চেন্নাইয়ে রাজ্যপালের আত্মীয়ের বিয়েতেও হাজির হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাম শাসিত রাজ্য কেরালা, আঞ্চলিক দল টিআরএস শাসিত তেলেঙ্গানা, আম আদমি পার্টি শাসিত দিল্লি ও পাঞ্জাব, কংগ্রেস শাসিত ছত্তিশগড় ও রাজস্থানে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল তামিলিসাই সুন্দরাজনের অভিযোগ, টিআরএস সরকার তাঁর ফোনে আড়ি পাতছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যপাল নিজের পদের অমর্যাদা করে রাজ্যের উন্নয়নে বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। কেরালার সিপিএম সরকারের সঙ্গেও রাজ্যপালের বিরোধ তুঙ্গে। রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেরালা সরকার। পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজ্যপালের জায়গায় আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসিয়ে বিধানসভায় আগেই বিল পাস হয়েছে। তবে সেই বিল এখনো রাজ্যপালের অনুমোদন পায়নি।
রাজ্যপাল নিয়ে বিতর্কে কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী মনে করেন, ‘সাংবিধানিক পদের মর্যাদা করা সবার কর্তব্য।’ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের মতে, ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্যপালের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’ তবে সিপিআই নেতা কে নারায়ণ মনে করেন, ভারতে রাজ্যপাল পদের কোনো প্রয়োজন নেই। রাজ্যপালের পেছনে বিশাল খরচের কথা মাথায় রেখে অনেকে পদটিকে সাদা হাতির সঙ্গে তুলনা করেন।