অনলাইন ডেস্ক
এক বছরের বেশি সময় ধরে অশান্ত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটের পর রাজ্যটিতে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে জাতিগত সংঘাত। সহিংসতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা জিরিবাম জেলা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিজেদের বাড়িঘর হারানো এসব মানুষের ঠাঁই হয়েছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসামের সাচার এলাকায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আসামের নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি সেখানে বিশেষ কমান্ডো মোতায়েন করা হয়েছে।
ইন্ডিয়া টাইমস জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের ৩ মে। কুকি ও মেইতেই গোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত সংঘাতকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। একের পর এক হত্যাকাণ্ডের খবর সামনে আসে। ঘরছাড়া হয় অসংখ্য মানুষ। দুই নারীকে বিবস্ত্র করে ঘোরানোর ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর ভারতজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
এবার লোকসভা ভোটের পর নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। গত ৬ জুন জিরিবামে এক চাষির শিরশ্ছেদ করা মরদেহ উদ্ধার হয়। সইবাম শরৎকুমার নামে ৫৯ বছরের এই চাষি মেইতেই জনগোষ্ঠীর মানুষ। তাঁর মরদেহ উদ্ধারের পর নিজেদের সুরক্ষায় অস্ত্র ব্যবহারের অধিকারের দাবিতে থানা ঘেরাও করে গ্রামবাসী। এ ঘটনায় অঞ্চলটিতে কারফিউ জারি করে প্রশাসন।
মেইতেই জনগোষ্ঠীর অভিযোগ, কুকিরা ওই চাষিকে হত্যা করেছে। ওই ঘটনার পর কুকি অধ্যুষিত বিভিন্ন গ্রামে হামলার অভিযোগ ওঠে।
সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে লোকজন এলাকা ছাড়তে শুরু করে। আসামের বিধানসভার সদস্য কৌশিক রায় জানিয়েছেন, জিরিবাম জেলা থেকে সহস্রাধিক মানুষ সাচারে আশ্রয় নিয়েছে। এ সংখ্যা বাড়ছেই। তিনি জানান, আশ্রয়প্রার্থীদের বেশির ভাগই কুকি ও হমার জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। দুই সম্প্রদায়ই জো নৃগোষ্ঠীর অংশ। এর বাইরে মেইতেই জনগোষ্ঠীর কিছু লোকও আসামে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে চলমান সংঘাতের মধ্যেই গত সোমবার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের বহরে হামলা হয়েছে। এদিন রাজ্যের রাজধানী ইমফল থেকে জিরিবামে যাওয়ার সময় তার বহরে হামলা চালানো হয়। এতে এক নিরাপত্তারক্ষী গুরুতর আহত হয়েছেন।