ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যকে ভেঙে তিন টুকরো করতে চান ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি–বিজেপির নেতারা। রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের নেতারাও চান আলাদা উত্তরবঙ্গ। জঙ্গলমহল বলে পরিচিত বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ার নেতারা চান আলাদা জঙ্গলমহল রাজ্য। রাজ্যকে বিভাজিত করার রাজনীতিতে ব্যস্ত বিভিন্ন দল–উপদল।
তবে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল সভানেত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, বুকের রক্ত দিয়ে হলেও তিনি পশ্চিমবঙ্গকে বিভাজনের হাত থেকে রক্ষা করবেন। পশ্চিমবঙ্গ বিভাজনের রাজনীতির সঙ্গে বাঙালির আবেগ জড়িয়ে রয়েছে বুঝতে পেরে সতর্ক অবস্থানে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। তাই দলীয় নেতাদের এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে নিষেধ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে দার্জিলিংকে আলাদা রাজ্য গোর্খাল্যান্ড করা নিয়ে বহুদিন ধরেই আন্দোলন চলছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কোচবিহার থেকে শুরু করে উত্তরের জেলাগুলি নিয়ে পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি। বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু, রাজু বিস্তারাসহ অনেক বিজেপি নেতাই মনে করেন, উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্য হলেই উন্নয়নের হার আসবে।
উত্তরবঙ্গের দাবির বাইরেও জঙ্গলমহলেও নতুন রাজ্যের দাবিতে সোচ্চার বিজেপির রাজনীতিবিদ ও লোকসভার সদস্য অনুপম হাজরা এবং সৌমিত্র খাঁয়ের মতো নেতারা। উত্তরবঙ্গের মতোই জঙ্গলমহলেও রাজনৈতিক আধিপত্য রয়েছে বিজেপির। কলকাতা বা তার আশপাশের কোনো জেলায় বিজেপি তেমন সুবিধা করতে না পারলেও জঙ্গলমহল বা উত্তরবঙ্গে তারাই বড় দল। নতুন রাজ্য হলে বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বলেও বিজেপি নেতারা মনে করছেন। তাই রাজ্যভাগের দাবিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের প্রভাব এই দুই অঞ্চলে বাড়াতে চান স্থানীয় বিজেপি নেতারা।
কিন্তু তাঁদের এই দাবির জবাবে শুরু হয়েছে তৃণমূলের পাল্টা প্রচার। উত্তরবঙ্গে দাঁড়িয়ে রাজ্যভাগের প্রশ্নে মমতা পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন বিজেপিকে। সিপিএম ও কংগ্রেসের পাশাপাশি কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ রাজ্যভাগের বিরোধী।