ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের আলোচিত নেতা ইয়াসিন মালিকের বিষয়ে করা ওআইসির মন্তব্য অগ্রহণযোগ্য। শনিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইয়াসিন মালিকের ইস্যুতে করা অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনকে (ওআইসি) সতর্ক করে দিয়ে এই মন্তব্য করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইয়াসিন মালিক একজন জঙ্গিবাদী নেতা। তাই তাঁকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করার আগে সতর্ক হওয়া উচিত ওআইসির এবং ইনডিপেনডেন্ট পারমানেন্ট হিউম্যান রাইটস কমিশনের। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী এ কথা বলেছেন।
অরিন্দম বাগচী আরও বলেন, ‘সারা দুনিয়া যেখানে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলছে সেখানে ইয়াসিন মালিক নিয়ে ওআইসির মন্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ভারতীয় বিচারব্যবস্থা সব দিক খতিয়েই ইয়াসিনের মতো কট্টর জঙ্গিবাদী এবং মানবতার শত্রুকে শাস্তি দিয়েছে।’
এর আগে, গত বুধবার ভারতের একটি বিশেষ আদালত জঙ্গিবাদীদের অর্থায়নের দায়ে ইয়াসিন মালিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তবে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ দাখিল করে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেছিল। তবে সব তথ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ শেষে আদালত ইয়াসিন মালিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। দিল্লির বিশেষ আদালত ইয়াসিন মালিককে দুই মামলায় যাবজ্জীবন, পাঁচ মামলায় ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁর এসব সাজা একই সঙ্গে চলমান থাকবে। একই সঙ্গে, তাঁকে ১০ লাখ টাকা জরিমানাও করেন আদালত।
এদিকে, শুনানির সময় ইয়াসিন মালিক আদালতে বলেন, তিনি যদি সন্ত্রাসীই হবেন তবে তাঁকে কেন অটলবিহারী বাজপেয়ির সরকার পাসপোর্ট দিয়ে বিশ্বব্যাপী কথা বলার সুযোগ দিয়েছিল। মালিক আরও দাবি করেন, তিনি ১৯৯৪ সাল থেকেই গান্ধীর মতাদর্শ অনুসরণ করে অস্ত্র ত্যাগ করে অহিংস আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছিলেন।
ইয়াসিন এ সময় ভারতীয় গোয়েন্দাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, তারা যদি বিগত ২৮ বছরের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনে যুক্ত থাকার প্রমাণ বের করতে পারে তবে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন এবং নিজেই ফাঁসির দড়িতে ঝুলবেন।
কিন্তু ইয়াসিন মালিককে দেওয়া শাস্তির বিপরীতে বেশ সমালোচনা শুরু হয়েছে। ওআইসি, আইপিএইচআরসিসহ বিভিন্ন সংগঠন এই রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তবে ভারত এসব সমালোচনা ও অভিযোগ আমলে না নিয়ে সাফ জানিয়েছে, ভারতীয় বিচারব্যবস্থার সমালোচনা বা ইয়াসিন মালিকের সমর্থনে কোনো বক্তব্য তাঁরা সহ্য করবে না।