অনলাইন ডেস্ক
ভারতের উত্তর প্রদেশে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব না দিলে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হবে জানানো হয়েছে। রাজ্যপাল যোগী আদিত্যনাথ এমন নির্দেশের কারণে রাজ্যটির ১৩ লাখের বেশি সরকারি চাকরিজীবী বিপাকে পড়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীরা তাদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব সরকারি পোর্টাল ‘মানব সম্পদে’ দাখিল না করেন তাহলে তাদের চলতি মাসের বেতন আটকে দেওয়া হবে।
গত বছরের আগস্টে এ নির্দেশনা জারি করে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। পরবর্তীতে কয়েক দফা এর সময়সীমা বাড়ানো হয়। তারপরও মাত্র ২৬ শতাংশ এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেছে। এবার নতুন করে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব দিতে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশ ১৭ লাখ ৮৮ হাজার ৪২৯ জন সরকারি চাকরিজীবী রয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র ২৬ শতাংশ তাদের সম্পত্তির হিসাব দিয়েছেন। যার অর্থ হলো এখনো ১৩ লাখ চাকরিজীবী তাদের সম্পত্তির হিসাব দেয়নি।
উত্তর প্রদেশের মুখ্য সচিব মনজ কুমার সিং বলেন, যারা ৩১ আগস্টের মধ্যে তাদের সম্পত্তির হিসাব দেবেন তাদেরই কেবল বেতন দেওয়া হবে। বাকিদের বেতন দেওয়া বন্ধ রাখা হবে।
মূলত সরকারি চাকরিজীবীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির জন্য রাজ্য সরকার এমন উদ্যোগ নিয়েছে। মন্ত্রী দানিশ আজাদ আনসারি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। এ জন্য আমরা এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’
এদিকে একাধিকবার সময় বাড়িয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব না নিতে পারায় সরকারের সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। বিরোধী দলগুলো বলেছে, একাধিক সময়সীমা বাড়ানো এই প্রমাণ করে যে, রাজ্য সরকার আদেশ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে।
সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র আশুতোষ ভার্মা বলেন, ‘কেন তাঁরা ২০১৭ সালে এটি আনেনি? এখন যোগী আদিত্যনাথ সরকার বিপাকে রয়েছে, তাই তাঁরা এটি করছে। তাঁরা বুঝতে পেরেছে যে, তাঁদের সমস্ত কর্মচারী দুর্নীতিগ্রস্ত। তাঁরা এটি আগে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়নি।’
কর্মী বিভাগের প্রধান সচিব এম দেবরাজ মুখ্য সচিবের জারি করা আদেশটি সমস্ত অতিরিক্ত মুখ্য সচিব, প্রধান সচিব, সচিবদের পাশাপাশি বিভাগীয় প্রধান এবং অফিস প্রধানদের কাছে পাঠিয়েছেন। আদেশ অনুসারে, যে সমস্ত কর্মচারী এই বিবরণ দিতে ব্যর্থ হবেন তাদের পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা হবে না।