টানা বৃষ্টিতে ভারতের আসাম রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। রাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর মধ্যে অন্তত আটটির পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে রাজ্যের অন্তত ২০টি জেলা প্লাবিত হয়েছে। এসব জেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় সাত লাখ মানুষ।
বন্যাকবলিত জেলাগুলো হচ্ছে—বিশ্বনাথ, কাছাড়, চড়াইদেহ, দারং, চিরাং, ধেমাজি, ডিব্রুগড়, গোলাঘাটা, জোরহাট, কামরূপ, লখিমপুর, শিবসাগর, সোনিতপুর, মরিগাঁও, নগাঁও, মাজুলি, করিমগঞ্জ, তামুলপুর, তিনসুকিয়া ও নলবাড়ি। আসাম সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে, এসব জেলায় ৬ লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ডিব্রুগড় জেলা থেকে ১৩ মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করেছেন বিমানবাহিনীর সদস্যরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, রাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর মধ্যে অন্তত আটটির পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র, সুবানসিরি, দিখৌ, দিসাং, বুড়িদিহিং, জিয়া-ভারালি, বেকি ও কুশিয়ারা। সামগ্রিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, আসামে চলতি বছর দুই দফা বন্যায় ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর মধ্যে শুধু গত মে থেকেই ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লখিমপুরে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার মানুষ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ধেমাজি ও কাছাড়। এ দুই জেলায় পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন যথাক্রমে ১ লাখ ১ হাজার ৩৩৩ এবং ৬৬ হাজার ১৯৫ জন।
রাজ্য সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে বন্যাকবলিত জেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে ৭২টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। শিগগিরই আরও ৬৪টি শিবির খোলার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
পাশের অরুণাচল প্রদেশে ব্যাপক বর্ষণের ফলে সৃষ্টি পাহাড়ি ঢলকে এই বন্যার জন্য দায়ী করেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সামগ্রিক বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে কথা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার বিষয়ে তাঁকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।