অনলাইন ডেস্ক
ভারতীয় ধর্মীয় সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, হত্যা, মন্দির ধ্বংস এবং সম্পত্তি পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। আর এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে গোষ্ঠীটি। বলেছে, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদের ধর্মাচারী চকের ইন্দিরা পার্কে ভাগ্যনগর গণেশ উৎসব সমিতি (বিজিইউএস) আয়োজিত বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রতি সংহতি সভায় অংশ নিয়ে আরএসএসের জাতীয় কমিটির সদস্য বাগাইয়া এই অভিযোগ করেন।
বাগাইয়া এ সময় ভারত সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান, যাতে বাংলাদেশের হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। তিনি বলেন, ‘পুরো দেশ তাদের পাশে রয়েছে।’ আরএসএস নেতা অভিযোগ করেন, ‘ইসলামি উগ্রবাদী শক্তি’ হিন্দুদের ওপর আক্রমণ চালালেও অন্তর্বর্তী সরকার তা প্রতিহত করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি এই উগ্রপন্থী শক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, স্বামী চিন্ময় কৃষ্ণদাসের মুক্তি এবং হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করার দাবি জানান।
এই সভায় বিজেপি নেতা টি রাজা সিং, এন. রামচন্দ্র রাও, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, আইনজীবী এবং অন্যান্যরা অংশ নেন। সভার সভাপতিত্ব করেন ভিএইচপির জাতীয় মুখপাত্র রবিনুতলা শশীধর। বিজিইউএসের সভাপতি জি. রাঘবা রেড্ডি এবং সাধারণ সম্পাদক বি. রাজাবর্ধন রেড্ডি উপস্থিত ছিলেন বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এর আগে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে বলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ জন্য তিনি ভারত সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য আইনসভা বিধানসভায় দেওয়া ভাষণে তিনি এই আহ্বান জানান।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভারত সরকার এই বিষয়টি জাতিসংঘের কাছে তুলে ধরতে পারে...যাতে একটি শান্তিরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে পাঠানো যায়।’ তিনি জানান, অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চান না। তবে, যখন বাংলাদেশি জেলেরা ভুলবশত ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করেছে বা কোনো বাংলাদেশি ট্রলার ডুবে গেছে, তখন তাঁর সরকার তাঁদের উদ্ধার করেছে এবং ভালোভাবে দেখভাল করেছে।
কেবল তাই নয়, পরে এই বিষয়টি ভারতের লোকসভা অধিবেশনেও উত্থাপন করে মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস। ৩ ডিসেম্বর লোকসভায় এই প্রস্তাব উত্থাপন করে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের সংসদ সদস্য সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বিবৃতি দাবি করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে এবং তারা এই বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে একত্রে কাজ করবে ও কেন্দ্রের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানাবে।