ভারতীয় সিনেমার অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল ৯০ বছর বয়সে পরলোক গমন করেছেন। তার কন্যা পিয়া বেনেগাল এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
পিয়া বলেন, ‘হ্যাঁ, এটি সত্যি। শ্যাম বেনেগাল আজ সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’
মুম্বাইয়ের ওয়কহার্ট হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরেই ক্রনিক কিডনি রোগের কারণ চিকিৎসাধীন ছিলেন শ্যাম। তিনি ছিলেন প্যারালাল সিনেমা আন্দোলনের প্রধান ব্যক্তিত্ব।
বেনেগাল তাঁর অনন্য ক্যারিয়ারে পেয়েছেন অসংখ্য স্বীকৃতি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—ভারতের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মাননা দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার এবং ১৮টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
তিনি ১৯৭৪ সালে ‘অঙ্কুর’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তাঁর পরিচালনার যাত্রা শুরু করেন। এতে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন অনন্ত নাগ এবং শাবানা আজমি। চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের বিপুল প্রশংসা অর্জন করে এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে দ্বিতীয় সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এটি বেনেগাল এবং এতে অংশ নেওয়া সবার ক্যারিয়ারের জন্যই একটি মাইলফলক হয়ে ওঠে।
তাঁর তৃতীয় চলচ্চিত্র ‘নিশান্ত’ মুক্তি পায় ১৯৭৫ সালে। এই সিনেমাটিও একটি মাইলফলক হয়ে ওঠে। ১৯৭৬ সালে এটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘পালমে ডিঅর’ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়। গিরীশ কারনাড, শাবানা আজমি, অনন্ত নাগ, অমরেশ পুরী, স্মিতা পাতিল এবং নাসিরুদ্দিন শাহের মতো তারকাদের নিয়ে তৈরি এই চলচ্চিত্রটি বেনেগালের নির্মাণশৈলীর উৎকর্ষের প্রমাণ।
বেনেগালের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে—মন্থন, ভূমিকা: দ্য রোল, জুনুন, অরোহণ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু: দ্য ফরগটেন হিরো, ওয়েল ডান আব্বা, মাম্মো, সরদারি বেগম, জুবেইদা ইত্যাদি।
সিনেমায় অবিস্মরণীয় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৬ সালে শ্যাম বেনেগালকে পদ্মশ্রী এবং ১৯৯১ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করা হয়।