ভারতের রাজস্থানের কোটা আইআইটি ও মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষার কোচিংয়ের জন্য সুপরিচিত। এখানকার কোচিং সেন্টারে পড়াশোনার চাপে শিক্ষার্থীরা বিষাদগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ আছে। সর্বশেষ এক বাঙালি ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে কোটায় এ বছর ২৮ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পশ্চিমবঙ্গের ছেলে ফরিদ অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল এন্ট্রান্সের জন্য কোটার একটি কোচিং সেন্টারে পড়তেন। আজ মঙ্গলবার সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাজস্থানের কোটা কার্যত একটি কোচিং শহরে পরিণত হয়েছে। আইআইটি ও মেডিকেল এন্ট্রান্সের কোচিং দেওয়া হয় শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। হাজার হাজার ছাত্র গোটা দেশ থেকে সেখানে যান কোচিং নিতে। অভিযোগ আছে, কোচিংগুলোতে ছাত্রদের ওপর প্রবল চাপ দেওয়া হয়।
চাপ সহ্য করতে না পেরে অনেকেই আত্মহননের পথ খুঁজে নেন। বস্তুত, এ বছর এখনো পর্যন্ত ২৮ জন ছাত্র আত্মহত্যা করেছেন। ফরিদ সর্বশেষ। শুধু তাই নয়, দেশের আইআইটিগুলোতেও প্রবল চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। আইআইটিগুলোতেও আত্মহত্যার ঘটনা লেগে আছে।
মন-সমাজবিদ মোহিত রণদীপ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘প্রথমত, এমন পড়ার চাপ দেওয়াই উচিত নয়, যার জেরে ছাত্ররা আত্মহত্যা করবেন। দ্বিতীয়ত, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ট্রেনিং যদি এতই ভয়াবহ হয়, তাহলে ওই ট্রেনিং সেন্টার বা কোচিং সেন্টারগুলোতে মনোবিদ রাখা দরকার।’
এই মনোবিদেরা নিয়মিত ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটি খেয়াল রাখতে পারেন বলে মনে করেন মোহিত। বস্তুত, অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন ছাত্রদের ওপর এত চাপ দেওয়া হচ্ছে? প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ধরন বদলানোর কথাও বলছেন কেউ কেউ।
মোহিতের দাবি, কোটায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ওই কোচিং সেন্টারগুলোতে প্রশাসনের ভিজিলেন্স শুরু করা উচিত। কোচিং সেন্টারগুলো আদৌ ছাত্রদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখে কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত এবং প্রয়োজনে সেন্টারগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা উচিত। এক বছরে যখন ২৮ জন ছাত্র আত্মহত্যা করেন, তখন বোঝা যায়, ওই জায়গা পড়াশোনার উপযুক্ত নয়।