কলকাতা: ভারতের লোকসভা নির্বাচনের এখনো আড়াই বছর বাকি। কিন্তু এখন থেকেই ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। সামনের বছর পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপিকে হারাতে তৎপর বিরোধী দলের নেতারা। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপিকে পরাস্ত করে তৃণমূল প্রকাশ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, তাদের লক্ষ্য এখন দিল্লির মসনদ।
পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জ্যোতি বসুর সামনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু তাঁর দল সিপিএম তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হতে দেয়নি। প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির নামও একাধিকবার জল্পনায় উঠে আসে। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁকেও সেই সুযোগ দেয়নি। ফলে ভারতের প্রধানমন্ত্রিত্ব এখনো বাঙালির কাছে অধরা। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে হারানোর পর মমতা নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর লক্ষ্য এখন দিল্লি। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে সেইমতো প্রস্তুতিও শুরু করেছে তৃণমূল। পশ্চিমবঙ্গে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও বিজেপি জিততে পারেনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সেখানে মমতার বিকল্প কোনো নেতাকে তুলে ধরতে পারেনি বিজেপি। একইভাবে লোকসভার ভোটে বিরোধীরা মোদির বিকল্প কোনো নেতাকে তুলে ধরতে না পারায় ২০১৯ সালেও জয় পেয়েছে বিজেপি। অনেকেই মনে করছেন, মোদিকে হারাতে প্রয়োজন বিকল্প মুখ। এ ক্ষেত্রে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সামর্থ্য নিয়ে সংশয় আছে অনেকের। তাই মোদির বিকল্প হিসেবে মমতাকে তুলে ধরতে মরিয়া তৃণমূল।
মমতাকে সামনে রেখেই জোটবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা চলছে। পশ্চিমবঙ্গে সাফল্য় লাভের পর নির্বাচন বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত কিশোর শুরু করে দিয়েছেন সেই প্রস্তুতি। ইতিমধ্যেই তাঁর উদ্যোগে নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেছেন। সাবেক কংগ্রেস নেতা, এনসিপির প্রধান শারদ পাওয়ার, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সাবেক মন্ত্রী যশোবন্ত সিনহার মতো নেতারা রয়েছেন আঞ্চলিক দলগুলোকে সংঘবদ্ধ করতে। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছে কংগ্রেসকে নিয়ে। ভারতীয় রাজনীতিতে এখনো কংগ্রেসই দ্বিতীয় বৃহত্তম দল। তাই কংগ্রেসকে উপেক্ষা করতে পারছেন না বিরোধী নেতারা। আবার মমতার নেতৃত্ব কংগ্রেস যে মানবে, এমন কোনো ইঙ্গিতও নেই; বরং বিরোধীদের এই প্রচেষ্টাকে আমলই দিচ্ছে না কংগ্রেস।