কলকাতা প্রতিনিধি
মাওবাদীদের হুমকির মুখে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের নেতাদের ক্রমাগত হুমকি দিয়েই চলেছেন মাওবাদীরা। বেআইনি ঘোষিত সশস্ত্র কট্টর বামপন্থী দলটি রীতিমতো পোস্টার লাগিয়ে তৃণমূল নেতাদের হুমকি দেওয়ায় আতঙ্ক আরও বেড়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জঙ্গলমহল বলে পরিচিত বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়ায় মাওবাদী পোস্টার ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
মাওবাদীরা তাদের পোস্টারে পুলিশের গুলিতে নিহত তাদের অন্যতম নেতা মাল্লোজুলা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষাণজিকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘কিষাণজি অমর রাহে।’ শাসকদল তৃণমূলকে হুমকি দিয়ে লিখেছে, ‘এত দিন তৃণমূল খেলেছে জনগণের সঙ্গে। এবার মাওবাদী খেলবে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে।’ ঝাড়গ্রাম জেলার মাণিকপাড়া স্টেশন ও অন্যান্য জায়গায় পোস্টারের কথা জানাজানি হতেই পুলিশ পোস্টার গুলি খুলে ফেলে। কিন্তু মানুষের মন থেকে আতঙ্ক কমেনি।
ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় নতুন করে মাওবাদী জঙ্গিদের তৎপরতাকে ঘিরে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় শাসকদলীয় নেতা–কর্মীরা বাড়তি নিরাপত্তার জন্য রাজ্য পুলিশের কাছে আবেদন করছেন। মাওবাদীদের তৎপরতা রুখতে জঙ্গলমহল নামে পরিচিত ওই এলাকায় পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীদের নজরদারি ও টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। এক সময়ে গোটা জঙ্গলমহলই ছিল মাওবাদী অধ্যুষিত।
সম্প্রতি নতুন করে তাদের প্রভাব বাড়ছে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা রাজ্য সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। এরই মধ্যে জঙ্গলমহলে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিআইয়ের (মাওবাদী) পোস্টার লাগানো শুরু করেছে। দলটিতে নতুন করে সদস্য নিয়োগ প্রক্রিয়াও আবারও চালু হয়েছে বলে গুজব শোনা যায়।
বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা চিত্ত মাহাতো তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী বাড়াতে জন্য জেলা পুলিশের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, কেবল চিত্ত একা নন, তিন জেলারই ছোট-মাঝারি-বড় সব স্তরের নেতারাই চাইছেন তাঁদের নিরাপত্তা বাড়ানো হোক। এবং এর কারণ হিসেবে সবাই উল্লেখ করেছেন তাদের এলাকায় মাওবাদীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত ৭ এপ্রিল মাওবাদীদের ডাকা জঙ্গলমহল বন্ধে অভূতপূর্ব সাড়া মেলায় স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও অবাক। তাই সেখানে নতুন করে শুরু হয়েছে পুলিশি তৎপরতা।