প্রতিনিধি, কলকাতা
স্পাইওয়্যার সফটওয়্যার পেগাসাস দিয়ে আড়ি পাতা ইস্যুতে আজ বৃহস্পতিবারও উত্তাল ভারতের জাতীয় সংসদ। ভারতের বিরোধী দলের নেতারা জানিয়ে দেন, পেগাসাস নিয়ে আলোচনা না হলে তাঁরা অধিবেশন চলতে দেবেন না। সংসদের বাইরেও তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। পেগাসাসের পাশাপাশি জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি, রাফায়েল যুদ্ধ বিমান কেনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ, তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিও তুলে ধরছেন বিরোধীরা।
লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা বিরোধীদের সংসদীয় আচরণ মানার পরামর্শ দিলেও কাজ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগাতে মরিয়া বিরোধীরা। দিল্লি সফররত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমত বন্দোপাধ্যায়ও বিরোধীদের মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলার কাজকে বেগবান করে তুলছেন।
মোদি সরকারের কৃষি বিল নিয়ে ক্ষুব্ধ কৃষকেরা। আট মাস ধরে চলছে কৃষক আন্দোলন। জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। ফ্রান্সে ভারতকে যুদ্ধ বিমান বেচা নিয়ে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইসরায়েলের বেসরকারি সংস্থার সফটওয়্যার দিয়ে ভারতের তিন শতাধিক নেতা-মন্ত্রী-বিচারপতি-সাংবাদিকদের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ। মোদি বিরোধী হাওয়া তুলতে বিরোধীরা সংসদের বাদল অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই সোচ্চার। প্রতিদিনই সংসদের ভেতরে ও বাইরে আন্দোলন চলছে। পেগাসাস নিয়ে আলোচনার দাবিতে প্রতিদিনই দফায় দফায় মুলতবি হচ্ছে সংসদ। এদিনও দফায় দফায় মুলতবির পর মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর দিনের মতো মুলতবি হয়ে যায় অধিবেশন।
লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, অনেকেই সংসদের নিয়মানুবর্তিতা মানছেন না। এমন চলতে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তাঁর সতর্কবার্তায় কোনো কাজ হয়নি। কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেন, সংসদে পেগাসাস নিয়ে আলোচনা করতে দিতে হবে। সরকার বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে।
তৃণমূল নেতা সুদীপ ব্যানার্জি বলেন, পেগাসাস ইস্যুতে আলোচনা না হলে অধিবেশন চলতে দেওয়া হবে না।
পেগাসাস নিয়ে বিরোধীরা এক জোট হচ্ছেন। সরকারকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে। দিল্লি সফররত মমতা ব্যানার্জি কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের পর অন্য বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে জোটের রাস্তা মসৃণ করছেন। তাঁর প্রশ্ন, সংসদে আলোচনা হবে না তো কোথায় হবে? চায়ের দোকানে? এটা কি চায়ের দোকানে আলোচনার বিষয়?
মমতার মতে, মোদি সরকার দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন। এখন বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপিকে হারাতে হবে। অন্যদিকে, বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, কংগ্রেস গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তাই সংসদের কাজকর্মে বাধার সৃষ্টি করছে।