পর্যটকের অভাবে কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশে’ হোটেল ব্যবসায় লাল বাতি

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১: ০৯
প্রতি বছরের ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে কলকাতা বাংলাদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে থাকত। অথচ, এখন তা জনশূন্য হয়ে খাঁ খাঁ করছে। ছবি: সংগৃহীত

বছর শেষে উৎসবের আমেজে আছে পুরো বিশ্বই। ব্যতিক্রম নয় ভারত-বাংলাদেশও। তবে এর মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশ’ এলাকার ব্যবসা পুনরুদ্ধারের কোনো আশা দেখা যাচ্ছে না। কারণ বাংলাদেশি ভ্রমণকারীরা ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করছেন দেশে চলমান অস্থিরতার কারণে। হোটেল বাণিজ্য নিম্নমুখী, রেস্তোরাঁগুলোও তাদের কার্যক্রম সীমিত করতে বাধ্য হয়েছে এবং খুচরা ব্যবসাগুলো টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে। মারকুইস স্ট্রিট, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, কিড স্ট্রিট এবং স্যাডার স্ট্রিটের মতো এলাকাগুলো জনমানবহীন রূপ ধারণ করেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোটেল মালিক ও ব্যবসায়ীদের মতে, ডিসেম্বর-জানুয়ারি হচ্ছে পর্যটনের শীর্ষ মৌসুম। কলকাতার উৎসব এবং বাংলাদেশের বছরান্তের ছুটির কারণে প্রচুর পর্যটক আসে কলকাতায়। কিন্তু এবার সেরকম কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না ডিসেম্বর শেষ হয়ে গেলেও।

ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী খান বলেন, ‘এই সময় এলাকায় ব্যবসার শীর্ষ সময়। হোটেলগুলো সাধারণত পর্যটকে পরিপূর্ণ থাকে এবং রেস্তোরাঁয় জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। বাংলাদেশি পর্যটকেরা তাদের বছর শেষের ছুটি কলকাতায় কাটাতে পছন্দ করেন এখানকার আবহাওয়া ও উৎসবের কারণে। কিন্তু এ বছর বাংলাদেশের অস্থিরতার কারণে ব্যবসা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে কেন্দ্রীয় কলকাতার অনেক হোটেল পুরো তলা বন্ধ করে দিয়েছে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমানোর জন্য। যেসব কামরা আগে টানা কয়েক সপ্তাহের জন্য বুক থাকত, সেগুলো এখন অর্ধেক দামে পাওয়া যাচ্ছে। একটি হোটেলের রিসেপশনে বসা কর্মী সবুজ তালুকদার বলেন, ‘এই সময় ঘরের ভাড়া ২০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ত, কিন্তু এখন তা খুবই কমে গেছে।’

টাঙ্গাইল থেকে আসা পর্যটক আবু হাশিম জানান, ঘরভাড়া অনেক কমে গেছে। তিনি বলেন, ‘মির্জা গালিব স্ট্রিটের যে হোটেল কামরায় আমি গত বছর দিনে ২ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়েছিলাম, তা এখন ৮০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।’ পর্যটকের অনুপস্থিতি স্থানীয় খুচরা এবং খাদ্যশিল্পের ওপরও প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশি ক্রেতাদের ওপর নির্ভরশীল দোকানগুলো বিক্রি কমে যাওয়ার কথা জানিয়েছে।

ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক মো. সাইফ শামীম বলেন, ‘আমরা ভারতীয় এবং ইউরোপীয় পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছি। বাংলাদেশের পর্যটকদের উপস্থিতি খুবই কম।’ এই অ্যাসোসিয়েশন পাঁচ শতাধিক হোটেল মালিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করে।

ট্রাভেল এজেন্ট অনিল দাস জানান, গত বছরের ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে তাদের ঘুমানোরও সময় পাওয়া যেত না। মানি এক্সচেঞ্জাররা প্রায়ই রাতে যাতায়াতকারী পর্যটকদের সেবা দিতেন। তারাও ব্যবসা কমে যাওয়ার কথা বলছেন। মানি এক্সচেঞ্জার মনোরঞ্জন রায় বলেন, ‘গত বছর ঢাকার একটি পরিবার আমার দোকানে রাত কাটিয়েছিল। কারণ, তারা কোনো হোটেলে জায়গা খুঁজে পায়নি।’

টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন

ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে বাংলাদেশের ‘নরম সুর’

কেন্দ্রের ষড়যন্ত্রে অবৈধ বাংলাদেশিদের পশ্চিমবঙ্গে ঢোকাচ্ছে বিএসএফ: মমতা

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বিজেপি সরকারের প্রতি তৃণমূলের আহ্বান

ভারতে ৮ পাকিস্তানির ২০ বছর করে কারাদণ্ড