হোম > বিশ্ব > ভারত

ভারতে এসে গেছে সেই এইচএমপি ভাইরাস, কর্ণাটকে শনাক্ত ২

অনলাইন ডেস্ক    

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪: ০৮
আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯: ৪৮

বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক বলে বিবেচিত হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) পৌঁছে গেছে প্রতিবেশী দেশ ভারতেও। দেশটির দক্ষিণী রাজ্য কর্ণাটকে এরই মধ্যে দুজন শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (আইসিএমআর)। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আইসিএমআর জানিয়েছে, কর্ণাটকে হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাসের (এইচএমপিভি) দুটি ঘটনা শনাক্ত করেছে। নিয়মিত শ্বাসযন্ত্রজনিত বিভিন্ন ভাইরাস পর্যবেক্ষণের সময় এই শনাক্তকরণ সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্লেষকেরা জনস্বাস্থ্যের জন্য এটিকে সতর্কসংকেত হিসেবে বিবেচনা করছেন।

আজ সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এইচএমপিভিতে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তি তিন মাস বয়সী এক মেয়েশিশু। অবশ্য জন্ম থেকেই শিশুটির ব্রঙ্কোপনিউমোনিয়ার ইতিহাস ছিল। বেঙ্গালুরুর ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার এইচএমপিভি সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়। তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে শিশুটির এই অসুস্থতার প্রাথমিক ধাক্কা অনেক প্রশ্ন তুলে ধরেছে।

দ্বিতীয় শনাক্তের ঘটনায় দেখা গেছে আট মাস বয়সী এক ছেলেশিশু এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হয়েছে। এই শিশুর ক্ষেত্রেও ব্রঙ্কোপনিউমোনিয়ার ইতিহাস রয়েছে। ৩ জানুয়ারি শিশুটি কর্ণাটকের ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার এইচএমপিভি পজিটিভ রিপোর্ট আসে। শিশুটি এখন সুস্থ হয়ে উঠছে। তবে এ দুটি ঘটনা এমন একটি ভাইরাসের উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়, যা অত্যন্ত সংক্রমণশীল এবং সম্ভবত বিপজ্জনক।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, এইচএমপিভি এরই মধ্যেই বিশ্বব্যাপী এমনকি ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে। এটি আরও উদ্বেগজনক যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে কেউই দেশের বাইরে যায়নি। এর অর্থ, ভাইরাসটি স্থানীয়ভাবে ছড়াচ্ছে এবং এর গতিপ্রকৃতি এখনই গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, এইচএমপিভি এমন একটি ভাইরাস. যা শ্বাসযন্ত্রজনিত জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে শিশু ও প্রবীণদের মধ্যে। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশে এর সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুতর শ্বাসযন্ত্রজনিত অসুস্থতার খবর পাওয়া গেছে।

ভারতের আইসিএমআর এবং ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সারভেইলেন্স প্রোগ্রামের (আইডিএসপি) তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ইনফ্লুয়েঞ্জা সদৃশ অসুস্থতা (আইএলআই) বা তীব্র শ্বাসযন্ত্রজনিত অসুস্থতা (এসএআরআই) কেসের কোনো অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, ভাইরাসটি যেহেতু ইতিমধ্যে শনাক্ত হয়েছে, এটি উপেক্ষা করা উচিত নয়।

সম্প্রতি পরিচালিত দেশব্যাপী প্রস্তুতি মহড়া ইঙ্গিত দিয়েছে যে ভারত সম্ভাব্য স্বাস্থ্যসংকট মোকাবিলায় প্রস্তুত। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, যদি এইচএমপিভি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে কি ভারতের স্বাস্থ্যব্যবস্থা এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে?

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাসের প্রকৃতি ও উপসর্গ অনেকটাই করোনাভাইরাসের মতো। এটির প্রকৃতি ও সংক্রমণের মাত্রা এবং এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সম্পর্কে এখনই আরও গবেষণা প্রয়োজন। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরিস্থিতি গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে এবং প্রয়োজন হলে জনস্বাস্থ্যের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এসবের মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এইচএমপিভি এমন এক ভাইরাস; যা গোপনে ছড়াতে পারে এবং যখন এটি চূড়ান্ত আঘাত হানে, তখন তা প্রাণঘাতী হতে পারে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে, বিশেষ করে যাদের পরিবারে ছোট শিশু বা বৃদ্ধ সদস্য রয়েছেন। এখনই সাবধানতা অবলম্বন না করলে, এই ভাইরাসটি আমাদের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

স্বামী ও ৬ সন্তান ফেলে ভিক্ষুকের সঙ্গে পালালেন নারী

ভারতে এইচএমপি ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫, সরকার বলছে চিন্তার কিছু নেই

হাসিনার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বীণা সিক্রি

হিমালয় অঞ্চলের ভূমিকম্পে কাঁপল ভারতও