দক্ষিণ লেবাননের গ্রামগুলোতে ইসরায়েলি হামলায় ৪ শিশুসহ ৯ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় এক হাসপাতালের পরিচালক এবং লেবাননের তিনটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইসরায়েল বলেছে, হিজবুল্লাহর রকেট হামলার প্রতিক্রিয়ায় তারা এই আক্রমণ চালিয়েছে। হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলি এক সেনাসদস্য নিহত হয়েছিলেন।
লেবাননের দুটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, আল-সাওয়ানা গ্রামে ইসরায়েলি হামলায় এক নারী ও তাঁর দুই সন্তান নিহত হয়েছে। শহরের হাসপাতালের পরিচালক হাসান ওয়াজনি এবং অন্য তিনটি নিরাপত্তা সূত্রের মতে, নাবাতিহের একটি ভবনে ইসরায়েলি হামলায় আরও দুই শিশু, তিনজন নারী ও একজন পুরুষ নিহত হয়েছেন।
ওয়াজনি রয়টার্সকে বলেন, ইসরায়েলি হামলার পর চিকিৎসার জন্য আরও সাতজন হাসপাতালে পৌঁছেছেন। হিজবুল্লাহ ও লেবাননের নিরাপত্তা সূত্রে জানা গেছে, পৃথক হামলায় চার হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
হিজবুল্লাহ অবশ্য গতকাল বুধবার কোনো অভিযানের ঘোষণা দেয়নি। তবে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রধান বলেছেন, বুধবার লেবাননের ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে।
ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র ইলানা স্টেইন সাংবাদিকদের বলেছেন, বুধবার সকালে লেবানন থেকে নিক্ষেপ করা রকেট হামলায় ইসরায়েলি এক নারী সৈন্য মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন আটজন। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
ইলানা স্টেইন বলেন, ‘আমরা বারবার স্পষ্ট করেছি যে, ইসরায়েল দুটি ফ্রন্টে যুদ্ধে আগ্রহী নয়। তবে উসকানি দিলে আমরা তার জোরালো জবাব দেব। বর্তমান বাস্তবতায় হাজার হাজার ইসরায়েলি বাস্তুচ্যুত এবং তারা বাড়ি ফিরতে পারছে না। এ পরিস্থিতি অসহনীয়। অবশ্যই তাদের দেশে ফিরে শান্তিতে ও নিরাপদে বসবাসের সুযোগ দেওয়া হবে।’
হিজবুল্লাহর প্রধান সাইয়েদ হাসান নাসরাল্লাহ গত মঙ্গলবার এক টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, গাজায় পূর্ণ যুদ্ধবিরতি হলেই তার দল গুলিবিনিময় বন্ধ করবে। তিনি বলেন, ‘গাজায় গুলিবর্ষণ থামলে আমরাও দক্ষিণে গুলি বন্ধ করব।’
ফিলিস্তিনি মিত্র হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়েছিল হিজবুল্লাহ। এরপর গত প্রায় চার মাস ধরে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে গুলি বিনিময় করছে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। এই সহিংসতায় লেবাননে নিহত হয়েছেন প্রায় ২০০, যার মধ্যে ১৭০ জনেরও বেশি হিজবুল্লাহ যোদ্ধা।
নিহতের মধ্যে প্রায় এক ডজন ইসরায়েলি সেনা এবং পাঁচজন ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক রয়েছে। এ ছাড়া, সীমান্ত এলাকায় দুই দেশেরই হাজার হাজার মানুষ হয়েছে বাস্তুচ্যুত।