হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় গণহত্যা: ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশ না মানলে কী হবে

আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বিষয় বাস্তবায়নে অস্থায়ী আদেশ দিয়েছেন। তবে আন্তর্জাতিক আদালতের এসব আদেশ মানবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নেবে একান্তই ইসরায়েল। কারণ, আইসিজের আদেশ বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠন নেই। ফলে চাইলে ইসরায়েল আইসিজের এই আদেশ স্রেফ নাকচ করে দিতেও পারে। 

তবে আইসিজের আদেশ বাস্তবায়নের জন্য ইসরায়েলকে চাপ দেওয়ার জন্য মামলার বাদীপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা ও অন্যান্য দেশ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের শরণাপন্ন হতে পারে। কিন্তু গাজা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদে একাধিকবার ভেটো দিয়েছে। ফলে সেখানে গিয়ে খুব একটা ফায়দা তোলা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। 

তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, আইসিজের আদেশগুলো বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন যদি ভেটো দেয়, তবে তা আন্তর্জাতিক নিয়মভিত্তিক যে বিশ্বব্যবস্থা, তা হুমকির মুখে পড়বে এবং চীন-রাশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মার্কিন প্রভাবকে দুর্বল ও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। 

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক নেভ গর্ডন বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোকে এখন ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ বা তাদের পক্ষে ভেটো ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের সর্বোচ্চ আদালতের ঘোষণার—ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে—পর এখন নতুন একটি খেলা শুরু হয়েছে।’

আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে সদস্য দেশগুলোকে বাধ্য করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সংস্থা না থাকায় বিশ্লেষকেরা বলছেন, মূলত গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য প্রাথমিকভাবে দুই মাসের যুদ্ধবিরতির যে আলাপ চলছে, তাই ভরসা এবং সহজ শর্তে এই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়ে ইসরায়েল দাবি করতেই পারে যে, দেশটি আইসিজের আদেশ বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে। 

ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আদালতের অস্থায়ী আদেশ বাস্তবায়ন করলেও দেশটিকে গণহত্যার অভিযোগ বয়ে বেড়াতেই হবে। অন্তত যতক্ষণ না বিষয়টি চূড়ান্তভাবে ফয়সালা হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে ইসরায়েলকে অন্তত কাগজে-কলমে হলেও আদেশ মেনে চলতে হবে।

আইসিজে তাঁর আদেশে বলেছেন, ইসরায়েলকে অবশ্যই ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন মেনে চলতে হবে। তবে আদেশে যুদ্ধবিরতির কোনো আহ্বান জানানো হয়নি। এ বিষয়ে নেভ গর্ডন বলেছেন, ‘ইসরায়েল শত্রুতা বন্ধ না করে আদালতের অন্যান্য অস্থায়ী আদেশ মেনে চলতে পারবে এমন কোনো উপায় আমি দেখছি না।’ তিনি বলেন, ‘মানবিক সহায়তা বাড়ানোর মতো পদক্ষেপের জন্য যুদ্ধবিরতি আবশ্যক।’ 

কিন্তু মানবাধিকার গোষ্ঠী ওয়ার অন ওয়ান্টের প্যালেস্টাইন চ্যাপ্টারের কর্মকর্তা নিল স্যামন্ডস বলেছেন, ‘আদালতের নির্দেশিত ব্যবস্থা কার্যকর করা কঠিন হবে। এতে সবকিছুই ইসরায়েলের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে বলেছেন, তাঁর দেশ এই আদেশ মানতে বাধ্য নয়।’ 

সব মিলিয়ে আইসিজের আদেশ প্রতিপালন নিশ্চিত করার জন্য কোনো সংগঠন না থাকায়, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের নজির রাখায় এবং ইসরায়েল সরাসরি এসব আদেশ প্রতিপালন বা মানতে অস্বীকার করায় এটি একপ্রকার নিশ্চিত যে, আইসিজের আদেশ একপ্রকার অপ্রতিপালিতই থেকে যাবে। ফলে এই আদেশের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের জন্য শান্তি আসবে এমন আশা সুদূর পরাহত।

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের

আসাদের খালি হয়ে যাওয়া কুখ্যাত কারাগারগুলো ভরে উঠছে আবার

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ফিলিস্তিনিদের প্রলোভনে ফেলে গাজা খালি করার মিশনে ইসরায়েলঘনিষ্ঠ ভুয়া সংস্থা

গাজায় নতুন শাসনকাঠানো কার্যকর শিগগির: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান শুরু

ইসরায়েলি সেটেলারদের আগ্রাসন ঠেকাতে ফিলিস্তিনি গ্রামে মানবঢাল একদল স্বেচ্ছাসেবক

সিরিয়ায় একযোগে ৭০ স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

আরব বসন্তে ক্ষমতাচ্যুত একনায়কেরা এখন কোথায় কেমন আছেন