অনলাইন ডেস্ক
গত ১১ মে, সকাল সাড়ে ছয়টার আশপাশের সময়ে আল-জাজিরার ক্যামেরাম্যান মাজদি বানুরার ক্যামেরায় একটি ভিডিও ধরা পড়ে। সেখানে দেখা যায়, মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে যাচ্ছেন এক নারী সাংবাদিক। তিনি আর কেউ নয়, আল-জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ।
ঘটনার আগে, সেদিন ভোরবেলায় ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে আসে একটি অভিযান পরিচালনা করতে। সংবাদ সংগ্রহের কাজে তাদের সঙ্গে ছিলেন একদল সাংবাদিকও। গায়ে ‘প্রেস’ লেখা নীল পোশাক, মাথায় হেলমেট। হঠাৎ আরবিতে শোনা গেল, ‘শিরিন’, ‘শিরিন’, ‘ওহ ম্যান, শিরিন! অ্যাম্বুলেন্স! মাজদি বানুরা তাঁর ভিডিও ক্যামেরা শব্দের উৎসের দিকে নিতেই দেখা যায়, মাটিতে পড়ে আছেন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ও আল-জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ।
আল-জাজিরার ক্যামেরায় ধরা পড়া ওই ভিডিও বিশ্লেষণ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, সাংবাদিকদের লক্ষ্য করেই সেদিন গুলি করেছিল ইসরায়েলের সৈন্যরা। সিএনএনের অডিও ফরেনসিক বিশ্লেষক ও বিস্ফোরক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ বলছেন, টার্গেট করেই হত্যা করা হয়েছে শিরিনকে। ভিডিও থেকে দেখা যায়, শিরিনের মরদেহ যেখানে পড়ে ছিল সেই স্থানটি ইসরায়েলি স্নাইপারদের জন্য একটি সহজ টার্গেট ছিল। শিরিনকে গুলি করার আগে সেখানে কোনো সংঘর্ষ চলছিল না, তাঁর আশপাশের দূর পর্যন্ত কোনো অস্ত্রধারীকেও দেখা যায়নি।
ঘটনাস্থলে থাকা ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সাদা হানায়শা সিএনএনকে বলেছেন, ‘আমরা ইসরায়েলি সৈন্যদের সামরিক যানের সামনে অন্তত ৫ থেকে ১০ মিনিটের মতো সময় দাঁড়িয়ে ছিলাম। তাঁরপর আমরা দল বেঁধে সৈন্যদের দিকে এগিয়ে যাই। এটি সাংবাদিকদের একটি অভ্যাস বলতে পারেন—যাতে তাঁরা বুঝতে পারে আমরা সাংবাদিক।’
হানায়শা আরও বলেন, শিরিনকে যখন গুলি করা হয় তখন তিনি প্রথমে ঘটনা বুঝতে না পেরে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যান। তিনি বলেন, ‘আমি গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছি। কিন্তু আমি ভাবতেই পারিনি তাঁরা আমাদের দিকে গুলি ছুড়েছে।’
সালিম আওয়াদ (২৭) নামে জেনিনের এক ক্যাম্পের অধিবাসী ১৬ মিনিটের ও ভিডিওটি তাঁর মোবাইলে ধারণ করেছিলেন। সেই ভিডিওই পরে সিএনএন বিশ্লেষণ করে দেখে।
এদিকে, ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে—তাঁদের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়নি যে কোন সৈন্য গুলি করেছিল।