অনলাইন ডেস্ক
আজ থেকে ১০৬ বছর আগে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনানায়ক ফিল্ড মার্শাল এডমন্ড অ্যালেনবি প্রথমবারের মতো দখল করেন তিন ধর্মের কাছে পবিত্র নগরী বলে বিবেচিত জেরুজালেম। সেই থেকেই ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নিপীড়ন চলে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত হুসাম জুমলাত। তিনি বলেছেন, ৭ অক্টোবর নয়, ফিলিস্তিনিদের ওপর নিপীড়ন শুরু হয়েছে আজ থেকে ১০৬ বছর আগে।
তুরস্কের প্রাচীন নগরী ইস্তাম্বুলে দেশটির সংবাদমাধ্যম টিআরটি আয়োজিত টিআরটি ওয়ার্ল্ড ফোরামে আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হুসাম জুমলাত বলেন, ‘এসবের শুরু হয়েছিল যখন, ব্রিটেন আমাদের সঙ্গে পরামর্শ না করে অন্যদের কাছে আমাদের ভূমি দিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং আমাদের ফিলিস্তিনি জাতিকে অ-ইহুদি সংখ্যালঘুতে পরিণত করেছিল।’
রাষ্ট্রদূত জুমলাত আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের সন্ধানে যে সংগ্রাম তার স্বীকৃতি দেওয়া উচিত এখন। আমাদের মানবাধিকার, জাতীয় অধিকার, সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ঐকমত্য এবং আইনের বিষয়গুলোকে সমাধান করতে হবে।’ জুমলাতের মতে, ‘ইসরায়েল যা বোঝে তা হলো সামরিক সমাধান, সহিংসতা, বেসামরিক নাগরিকদের ভয় দেখানো এবং বেসামরিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করা।’
হুসাম জুমলাত বলেন, ইসরায়েল এসব নিষ্ঠুরতা চালাতে পারে কারণ তারা ফিলিস্তিনিদের মানবেতর বলে বিবেচনা করে। তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই শুনেছেন, ইসরায়েলি মন্ত্রীরা আমাদেরকে “মানুষের মতো পশু” বলে উল্লেখ করেছেন। যেহেতু সাধারণ মানুষকে এভাবে (অমানবিক উপায়ে) হত্যা করা যায় না, তাই তাদের মানবেতর হিসেবে চিহ্নিত করতে হলে আর কোনো বাধা থাকে না।’
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ হাজারে। যার অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। আহতের সংখ্যাও প্রায় অর্ধলাখ। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা জানিয়েছেন, অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৯৯৭-এ।
স্থানীয় সময় গতকাল রোববার সন্ধ্যায় হতাহতের এই সংখ্যা জানান আশরাফ আল-কুদরা। এ সময় তিনি জানান, ৬৩ দিন ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে আহত হয়েছে আরও অন্তত ৪৯ হাজার ২২৯ জন।