অনলাইন ডেস্ক
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার রাফাহে মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে সহায়তা দেওয়া পুলিশের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার কথা নিশ্চিত করেছেন মধ্যপ্রাচ্যের মানবিক ইস্যুতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিশেষ দূত ডেভিড স্যাটারফিল্ড। তিনি বলেছেন, বর্তমানে পুলিশের পাহারা না থাকায় গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
ডেভিড স্যাটারফিল্ড ফিলিস্তিনের পুলিশের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘১০ দিন বা দুই সপ্তাহ আগে ফিলিস্তিনের সাত, আট বা নয়জন পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। পুলিশ কর্মকর্তাদের এই ইউনিট গাজায় জাতিসংঘের পাঠানো সাহায্য পৌঁছে দেওয়া তদারক করত।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন পুলিশের পাহারা নেই। তাই গাজায় জাতিসংঘ বা অন্য কারও যেমন—জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত বা অন্য কোনো সাহায্য সংস্থার পাঠানো ত্রাণসামগ্রী গাজায় নিরাপদে পৌঁছানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’
জাতিসংঘের ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা সংস্থা ওসিএইচএ জানিয়েছে, রাফাহে আশ্রয় নেওয়া মানুষ এতটাই অনাহারে আছে যে, খাবার হাতে পাওয়ামাত্রই তারা সেটা খেয়ে ফেলছে। সংস্থাটির মতে, ফেব্রুয়ারির ৯ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে গড়ে প্রতিদিন গাজায় প্রবেশ করেছে ৪৩টিরও কম ত্রাণবাহী ট্রাক, যা আগের তুলনায় অনেক কম।
পুলিশের প্রহরা না থাকায় গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো যাচ্ছে না বলে ত্রাণবাহী শত শত ট্রাককে সীমান্তের ওপারে মিসরের গুদামে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন ডেভিড স্যাটারফিল্ড।
তিনি আরও বলেন, ‘যখন আমরা গাজার পুলিশের কথা বলি, সেখানে কার্যত হামাসের সদস্যরাও থাকেন। তবে ত্রাণ পৌঁছাতে সহায়তাকারীদের মধ্যে এমন ব্যক্তিরাও ছিলেন, যাঁরা হামাসের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নন।’
ফেব্রুয়ারির ৬ ও ১০ তারিখে রাফাহে পুলিশের গাড়িতে ইসরায়েলিদের দুটি পৃথক হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দারা ইসরায়েলি আক্রমণের মুখে আশ্রয় নিয়েছিল দক্ষিণের শহর রাফাহে। যুদ্ধ শুরুর আগে শহরটিতে ছিল প্রায় আড়াই লাখ মানুষের বসবাস। তবে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে উপত্যকাটির অর্ধেকের বেশি মানুষ অর্থাৎ, প্রায় ১৫ লাখ মানুষ রাফাহে আশ্রয় নিয়েছিল।