আবারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে ইরাক। দেশটির প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুক্তাদা আল-সদরের রাজনীতি থেকে অবসর ঘোষণার পরপরই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁর সমর্থকেরা। ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে বাগদাদের সুরক্ষিত গ্রিন জোনের সরকারি ভবন এলাকায় ভাঙচুর চালান তাঁরা। বিক্ষোভ দমাতে গেলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩৫০ জনেরও বেশি।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানা যায়, পরিস্থিতি বিবেচনায় এরই মধ্যে বাগদাদে কারফিউ জারি করা হয়েছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত মন্ত্রিসভার অধিবেশন স্থগিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাদিমি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ।
মুক্তাদা আল-সদরের সমর্থকেরা তাঁর ডাকা দেশটির সংসদ ভেঙে দেওয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। চলমান আন্দোলনের কারণে দেশটি প্রায় ১০ মাস ধরে একধরনের অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে সদরের রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক সংকট উসকে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
গ্রিন জোন ঘিরে রাখা হাজারো বিক্ষোভকারীকে হটাতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে, নিজের সমর্থকদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর বলপ্রয়োগ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন মুক্তাদা আল-সদর।
এদিকে কুয়েত দূতাবাস তাঁদের নাগরিকদের ইরাক ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। নিজেদের নাগরিকদের ইরাক ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে তুরস্ক। এ ছাড়া সব ধরনের ফ্লাইট বাতিলসহ ইরাক-ইরান সীমান্ত বন্ধ করেছে তেহরান।
গত অক্টোবরের নির্বাচনে সদরের নেতৃত্বাধীন জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও অন্য শিয়া দলগুলোর সঙ্গে বিরোধের জেরে সরকার গঠন সম্ভব হয়নি। প্রতিক্রিয়ায় পার্লামেন্ট থেকে নিজের দলের আইনপ্রণেতাদের প্রত্যাহার করে নেন তিনি। এর পর থেকে প্রতিবাদ ও অবস্থান ধর্মঘট করার মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছেন এই শিয়া নেতা।