অনলাইন ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) কামানের গোলায় নিহত হয়েছেন খাদ্য সহায়তা পাওয়ার অপেক্ষায় দাঁড়ানো তিন ফিলিস্তিনি। স্থানীয় চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, আজ বুধবার গাজার উপকূলীয় আল-রশিদ স্ট্রিটে ঘটেছে এই ঘটনা। নিহত তিনজনের পরিচয় জানান হয়নি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলেছে যে, গাজার উত্তরাঞ্চলের ফিলিস্তিনিরা উপকূলীয় আল-রশিদ স্ট্রিটে জড়ো হচ্ছে খাবারের আশায়। সেখানকার অনেক বাসিন্দাই অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। ময়লা আবর্জনার মাঝে শিশুদের খাবার খুঁজতেও দেখা গেছে। খাদ্য সহায়তার জন্য তারা মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করছে।
ওয়াফা নিউজ এজেন্সি আরও জানিয়েছে যে, গাজা শহরের দক্ষিণাংশে শেখ ইজলিন পাড়ায় ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাবর্ষণে আরও তিনজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি হামলাগুলি গাজার আশপাশের অন্যান্য এলাকাগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। যার ফলে আরও অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
ওয়াফা নিউজ বলেছে, আইডিএফের লক্ষ্যবস্তুর মাঝে গাজার আশপাশের যেসব অঞ্চল রয়েছে সেসব হলো— তাল আল হাওয়া, জেইতুন এবং সাবরা।
এদিকে, গাজার উত্তরে যে কয়টা হাসপাতালে আংশিকভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া যাচ্ছিল সেসবের অন্যতম হচ্ছে আল-আওদা হাসপাতাল। এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ সালহা জানিয়েছেন, হাসপাতালটির দুটি অপারেটিং রুম আইডিএফের হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় সকল অস্ত্রোপচার বাতিল করা হয়েছে।
আল জাজিরাকে মোহাম্মদ সালহা বলেন, এর মানে হল প্রসূতি এবং স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত সমস্ত চিকিৎসা পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে।
বিশ্বের একাধিক মানবাধিকার সংগঠন অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ পরিচালনার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে গাজাবাসীকে ক্ষুধার্ত রাখার কৌশল নিয়েছে। দেশটি এই বিষয়কে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদও ২০১৮ সালে এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ বলে ঘোষণা করেছিল।
এদিকে, জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থার (ওসিএইচএ) উপপ্রধান রমেশ রাজাসিংহাম নিরাপত্তা পরিষদে বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারির শেষ সময়ে এসে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, গাজার জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ, ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষ থেকে মাত্র এক কদম দূরে।’