অনলাইন ডেস্ক
হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি না দিলে ইসরায়েল থেকে গাজায় কোনো মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। তবে গাজাকে ১০ দিন যাবৎ সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রাখার পর আজ বুধবার মিশর থেকে গাজায় মানবিক সহায়তা যেতে দেবে বলে রাজি হয়েছে দেশটি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
আজ মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ইসরায়েলের শীর্ষ কর্তাদের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘অপ্রতিরোধ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ’ সমর্থন রয়েছে। গাজায় মৌলিক মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনুরোধে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রণালয় তিনটি শর্ত নির্ধারণ করেছে।
শর্ত তিনটি হলো, ১. হামাস জিম্মিদের ফেরত পাঠানোর আগ পর্যন্ত ইসরায়েল তার ভূখণ্ড থেকে গাজা উপত্যকায় কোনো মানবিক সাহায্য পাঠানোর অনুমতি দেবে না। ২. আন্তর্জাতিক রেড ক্রসকে জিম্মিদের কাছে পৌঁছানো এবং এর জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাতে কাজ করবে। ৩. ইসরায়েল মিসর থেকে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে বাধা দেবে না। যতক্ষণ এটি কেবলমাত্র দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় অবস্থিত বেসামরিক জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য, জল এবং ওষুধ সরবরাহ করে। তবে হামাসের কাছে যেকোনো সরবরাহের চেষ্টা করলে ইসরায়েল তাতে বাধা দেবে।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের সদস্যরা গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা করে। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বোমা হামলার পাশাপাশি সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। দুদিন পর ৯ অক্টোবর থেকে পুরোপুরি গাজা অবরোধের ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েল সেখানে খাবার, পানি, ওষুধ ও গ্যাস যাওয়া বন্ধ করে দেয়।
এদিকে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে ক্রমেই পানিশূন্য হয়ে পড়ছে গাজা। জীবনযাত্রা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে গাজাবাসীর। এই অবস্থাকে গাজাবাসীর জন্য ‘জীবন-মরণের ব্যাপার’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ। গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলার পরপরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে গাজায় অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল। অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে জ্বালানি, বিদ্যুৎ, পানি সবই বন্ধ করে দেয় দেশটি।
গত সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই গাজায় পানির সংকট এতটাই বেশি যে গাজাবাসী দীর্ঘদিন ধরেই তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিদিন যে পরিমাণ পানি প্রয়োজন তা পাচ্ছে না। প্রত্যেক ইসরায়েলি যেখানে প্রতিদিন ২৪০ থেকে ৩০০ লিটার পানি ব্যবহার করে, সেখানে গাজাবাসী প্রতিদিন পানি ব্যবহার করছে মাত্র ৮৩ দশমিক ১ লিটার।