হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

তেহরানের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন জার্মান-ইরানি নারী নাহিদ তাগাভি

অনলাইন ডেস্ক

আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২০: ২১
জার্মানির বিমানবন্দরে নাহিদ তাগাভির সঙ্গে মেয়ে মরিয়ম ক্লারেন। ছবি: বিবিসি

জার্মানি ও ইরানের নাগরিক নাহিদ তাগাভি তেহরানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। সোমবার বিবিসি জানিয়েছে, তাগাভির মেয়ে মরিয়ম ক্লারেন তাঁর মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এক্স মাধ্যমে মায়ের সঙ্গে বিমানবন্দরে একটি ছবি পোস্ট করে তাগাভির মেয়ে মরিয়ম লিখেছেন, ‘শেষ হয়ে গেছে। নাহিদ এখন মুক্ত! ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানে চার বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক বন্দী থাকার পর আমার মা...মুক্তি পেয়েছেন এবং এখন জার্মানিতে ফিরে এসেছেন।’

৭০ বছর বয়সী তাগাভিকে ২০২০ সালের অক্টোবরে ইরানের রাজধানী তেহরানে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের বছর আগস্ট মাসে তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অভিযোগ ছিল—জাতীয় নিরাপত্তা ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে তাগাভি একটি দল গঠন করেছেন এবং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছেন। তবে তাগাভি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, অভিযোগটি সম্ভবত নারীদের অধিকার সম্পর্কিত একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাগাভির বিচার প্রক্রিয়াকে চরমভাবে অন্যায্য বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।

বিমানবন্দরে তোলা মা-মেয়ের সেই আলিঙ্গনের ছবিতে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছেন, ‘একটি আনন্দময় মুহূর্ত, নাহিদ তাগাভি অবশেষে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারলেন।’

তাগাভির মুক্তির বিষয়ে ইরানি বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি। অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে বন্দী থাকাকালীন তাগাভির স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি ঘটে। সেখানে পরিস্থিতি ছিল ‘নিষ্ঠুর এবং অমানবিক’। চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল ‘অপর্যাপ্ত’।

কারাগারের মধ্যে তাগাভি প্রায় সাত মাস একাকী ছিলেন। এই সময়টুকু তিনি মেঝেতে শুয়ে রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছেন।

মেয়ে মরিয়ম জানিয়েছেন, তাগাভি হার্নিয়েটেড ডিস্ক, অস্টিওপোরোসিস, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০২২ সালের জুলাই মাসে তাকে জরুরি চিকিৎসার জন্য সাময়িক মুক্তি দেওয়া হলেও চার মাস পর আবার কারাগারে পাঠানো হয়।

অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, রোববার তাগাভি জার্মানিতে ফিরে গেছেন। সংস্থাটির এক বিবৃতিতে তাঁর মেয়ে বলেছেন, ‘আমাদের আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে একই সঙ্গে আমরা সেই চার বছরের জন্য শোক প্রকাশ করছি, যা আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইভিন কারাগারের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা তো আছেই।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইরানকে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা সব অরাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

তাগাভির মুক্তি এমন এক সময়ে এল, যখন জামশিদ শর্মাহদ নামে আরেক জার্মান-ইরানি নাগরিকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বার্লিন এবং তেহরানের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এই উত্তেজনার জের ধরে গত অক্টোবরের শেষদিকে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের তিনটি কনস্যুলেট বন্ধ করার নির্দেশ দেন।

শর্মাহদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিলেন ইরানের আদালত। কিন্তু পরে তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানি বিচার বিভাগের বিবৃতি এবং তাঁর পরিবারের অভিযোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তি হতে পারে আজ

যুদ্ধ শেষে গাজা পুনর্গঠন ও শাসনের পরিকল্পনা দেবেন ব্লিঙ্কেন

এ সপ্তাহেই গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি, নিহত বেড়ে ৪৬৬০০

ফিলিস্তিনের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে ইসরায়েলের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সিদ্ধান্ত

সেকশন