অনলাইন ডেস্ক
ইসরায়েলের নিরবচ্ছিন্ন ও নির্বিচার বিমান হামলার কারণে গাজায় ত্রাণসহায়তা ঢুকতে পারছে না। যা-ও ঢুকছে, তা শহরটির ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দার জন্য নিতান্তই অপ্রতুল। এই অবস্থায় জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে গাজায় অন্তত ৫ লাখ ৭০ হাজার মানুষ ক্ষুধা নিয়ে দিনাতিপাত করছে। পরিস্থিতি দ্রুত দুর্ভিক্ষের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় অপ্রতুল মানবিক সহায়তা প্রবেশ করায় প্রতিদিনই অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ডব্লিউএফপির প্রধান অর্থনীতিবিদ আরিফ হোসাইন বলেন, ‘পরিস্থিতি যেকোনো সময় আরও খারাপের দিকে মোড় নিতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গাজায় যা ঘটতে যাচ্ছে, এত বড় আকারের বিপর্যয় আমি আর কখনো দেখিনি।’
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ডব্লিউএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরো গাজার অধিবাসীদের সবাই খাদ্যসংকটে ভুগছে। তবে এর মধ্যে ৫ লাখ ৭০ হাজার মানুষের অবস্থা ভয়াবহ বিপর্যয়কর। এইসংখ্যক মানুষ স্রেফ না খেয়ে বা ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে আরিফ হোসাইন আরও বলেন, ‘এটি এমন একটি অবস্থা, যেখান গাজার প্রায় সবাই কমবেশি ক্ষুধার্ত।’
ডব্লিউএফপির প্রধান অর্থনীতিবিদ এ সময় গাজায় মহামারি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘এখানকার লোকজন মহামারির খুব কাছাকাছি রয়েছে। পর্যাপ্ত পুষ্টি না পাওয়ায় তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা অনেক বেশি দুর্বল হয়ে গেছে।’
এদিকে, গত ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরায়েলি নির্বিচার হামলায় গাজা ও পশ্চিম তীরে এখন পর্যন্ত ২০ হাজারের অধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৫৬ হাজারেরও বেশি। গাজার জনসংযোগ বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গাজায় এখনো ৬ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই মানুষগুলো ইসরায়েলি হামলার কারণে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে গেছে। তাদের জীবিত উদ্ধারের কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
অন্যদিকে ৭৫ দিনের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে ১৩৭ ইসরায়েলি সেনা প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী। তবে এই সময়ে তারা হামাসের ৭ হাজার যোদ্ধাকে হত্যা করেছে বলেও দাবি করেছে।