গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার লক্ষ্যে হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলছে কাতারে। আলোচনা করতে দোহাতেই অবস্থান করবে ইসরায়েলি আলোচক দল। আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এ তথ্য জানিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এবারের আলোচনা দীর্ঘ হবে। গণমাধ্যমটিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী বুধবার পর্যন্ত ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থান করবে। যুদ্ধবিরতির আলোচনা নিয়ে ব্যাপক জল ঘোলা করার পর অবশেষে গত সোমবার দোহায় যান ইসরায়েলি প্রতিনিধিরা।
দীর্ঘ ১৫ মাস গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার পর গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। যুদ্ধবিরতির প্রাথমিক খসড়ায় ৪২ দিন করে তিন ধাপে ভাগ করা হয় বিরতির সময়কাল। প্রথম ধাপের ৪২ দিন শেষ হয়েছে গত ১ মার্চ। খসড়া অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ১৬তম দিন থেকেই দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরুর হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু, প্রথম ধাপ শেষ হয়ে গেলেও এ নিয়ে গড়িমসি করছিলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। যে আলোচনা বিরতির প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে শুরু হওয়ার কথা ছিল নেতানিয়াহু প্রশাসনের টালবাহানায় তা শুরু হয় প্রথম ধাপ শেষ হওয়ারও ১০ দিন পর। তবে, আলোচনার অগ্রগতি সম্পর্কে কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেরিতে হলেও আলোচনা শুরু হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, গাজায় এখন আগের মতো বোমাবর্ষণ ও বিমান হামলা না থাকায় এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগ অনেকটাই কমে গেছে। কিন্তু খাবার-পানি-বিদ্যুৎ-পোশাকের অভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরতে হচ্ছে গাজাবাসীকে। আগের তুলনায় তাদের অবস্থা কোনোভাবেই ভালো হয়নি। তাই এই মুহূর্তে আলোচনার মধ্য দিয়ে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিশ্চিত করাই সবচেয়ে জরুরি হয়ে উঠেছে।
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিজেদের বর্বর চেহারা আবার প্রদর্শন করা শুরু করে দিয়েছে ইসরায়েলি প্রশাসন। ১ মার্চই উপত্যকায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে, উপত্যকায় বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। এমন পরিস্থিতিতে লাখ লাখ মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
হামাস যুদ্ধবিরতি চাইলেও ইসরায়েল পুরোপুরি যুদ্ধ বন্ধে রাজি নয়। তারা চায় প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে আরেকটু দীর্ঘ করতে, যেন জিম্মিবিনিময় চলতে পারে।