হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

১৩ বছর আগে গ্রাফিতিতে সিরিয়ার ভাগ্য নির্ধারণ করেছিল এক কিশোর

দক্ষিণ সিরিয়ার দারা শহরের মাওয়াইয়া সাইয়াসনেহ। ছবি: সংগৃহীত

২০১১ সাল, দক্ষিণ সিরিয়ার দারা শহরের মাওয়াইয়া সাইয়াসনেহর বয়স তখন মাত্র ১৪ বছর। বন্ধুদের নিয়ে ছুটে বেড়াতেন শহরের অলিতে-গলিতে। এই কিশোরের এক বিদ্রোহী কর্মকাণ্ড যেন লিখে দিল সিরিয়ার ভবিষ্যৎ।

১৩ বছর আগে মাওয়াইয়া একদিন সিরিয়ার রাজপথে দেয়ালে দেয়ালে স্প্রে-পেইন্ট দিয়ে গ্রাফিতি আঁকলেন, যাতে লেখা—‘এজাক এল ডোর, ইয়া ডাক্তার’ অর্থাৎ ‘এখন তোমার পালা, চিকিৎসক।’

এ গ্রাফিতি ছিল তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ইঙ্গিত করে, যিনি এককালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ছিলেন। এরপরেই সিরিয়ায় শুরু হয় এক বিদ্রোহের, যা একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক গৃহযুদ্ধগুলোর মধ্যে একটি।

মাওয়াইয়া ও তাঁর বন্ধুরা স্থানীয় পুলিশের হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। সেই ক্ষোভ থেকে তাঁরা এই প্রতিবাদ করেছিলেন, যা জনসম্মুখে নিয়ে এসেছিল বাশার আল-আসাদ সরকারের আসল চিত্র। আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে জমে থাকা ক্ষোভ।

এই ঘটনার পর মাওয়াইয়া ও তাঁর বন্ধুদের ২৬ দিন আটকে রেখে নির্যাতন করে মুকহাবারাত। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের হাতিয়ার ছিল গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর তৈরি নেটওয়ার্ক মুকহাবারাত। এ ঘটনায় দারার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। মাওয়াইয়াদের মুক্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন অভিভাবক, প্রতিবেশীসহ দারা শহরের হাজার হাজার মানুষ। মুখোমুখি হয় টিয়ার গ্যাস ও গুলির।

নির্যাতনে জখম ছেলেদের ছবি ছড়িয়ে পড়লে এই ঘটনা একটি প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে ওঠে। দারা শহর থেকে পুরো সিরিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ।

২০১১ সালের ১৫ মার্চ প্রথমবারের মতো সিরিয়ায় সমন্বিত ‘ডে অব রেজ’ বা ‘ক্ষোভের দিন’ পালিত হয়। স্থানীয় অসন্তোষ পরিণত হয় জাতীয় আন্দোলনে। লক্ষ্য আসাদ সরকারের পতন ও স্বাধীনতা।

আন্দোলন দমাতে শুরু হয় নির্মম ও লাগাতার দমন-পীড়ন। নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়, ভিন্নমতাবলম্বীদের কারাগারে নিক্ষেপ করে। অসংখ্য সিরিয়াবাসী নির্যাতনের শিকার হয়। বিদ্রোহীরা অস্ত্র হাতে তুলে নিলে আরব বসন্ত দ্বারা অনুপ্রাণিত এই আন্দোলন দ্রুতই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিণত হয়।

২০১১ সালের জুলাই মাসে আসাদের সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে আসা সৈন্যদের নিয়ে গঠিত হয় ফ্রি সিরিয়ান আর্মি (এফএসএ)। তবে এটি একটি ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট গঠন করতে ব্যর্থ হয়। এই ব্যর্থতা, বিশৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে কাজে লাগিয়ে পরে জাবহাত আল-নুসরা, আইএসের মতো চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলো নিজেদের শক্তিশালী করে তোলে।

সেই গ্রাফিতির ঘটনার ১৩ বছর পর, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের পতন হয়েছে। পতন হয়েছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের। আল-আসাদ একটি উড়োজাহাজে করে দামেস্ক ছেড়ে অজানা গন্তব্যে চলে গেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় অবসান হয়েছে আল-আসাদ পরিবারের প্রায় ৫৪ বছরের শাসনের।

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের

আসাদের খালি হয়ে যাওয়া কুখ্যাত কারাগারগুলো ভরে উঠছে আবার

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ফিলিস্তিনিদের প্রলোভনে ফেলে গাজা খালি করার মিশনে ইসরায়েলঘনিষ্ঠ ভুয়া সংস্থা

গাজায় নতুন শাসনকাঠানো কার্যকর শিগগির: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান শুরু

ইসরায়েলি সেটেলারদের আগ্রাসন ঠেকাতে ফিলিস্তিনি গ্রামে মানবঢাল একদল স্বেচ্ছাসেবক

সিরিয়ায় একযোগে ৭০ স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

আরব বসন্তে ক্ষমতাচ্যুত একনায়কেরা এখন কোথায় কেমন আছেন