তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক শাখার শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে বদলা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলে হামলা না চালাতে ইরানকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশ। কিন্তু এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে আন্তর্জাতিক নানা কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে সামরিক হামলার হুমকি দেওয়া থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
কিন্তু জবাবে পেজেশকিয়ান রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলেছেন, পাল্টা জবাব দেওয়াটাই অপরাধ বন্ধ করার পথ এবং এই জবাব দেওয়া ইরানের ‘আইনগত অধিকার’।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেছেন, ইসলামিক প্রজাতন্ত্র জাতীয় নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। স্বীকৃত অধিকার প্রয়োগের জন্য ইরানের কারও অনুমতির প্রয়োজন নেই।
ইসরায়েল হামাস নেতা হানিয়াকে হত্যার দায় স্বীকার করেনি। তবে ইরানে হামলার হুমকির মুখে তাঁরা সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রেখেছে।
ওদিকে, লেবাননে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর কমান্ডার নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই গোষ্ঠীও ইসরায়েলে হামলা করে পাল্টা জবাব দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার সন্ধ্যায়, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি এক যৌথ বিবৃতিতে ইরান ও এর মিত্রদের ইসরায়েলে হামলা চালানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়। এমন হামলা আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে সতর্ক করে তারা।
পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সরাসরি ইরানের প্রেসিডেন্টকে ফোন করে ইসরায়েলে তাঁদের হামলার হুমকি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ২০২১ সালের মার্চের পর ইরানকে যুক্তরাজ্য থেকে সরাসরি এমন ফোনকল এটিই ছিল প্রথম।
ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, স্টারমার ফোনে ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানকে বলেন, ‘ভুল হিসাব-নিকাশের মারাত্মক ঝুঁকি আছে। এখন সময় শান্ত থাকার এবং সতর্কভাবে পরিস্থিতি বিবেচনা করার।’
ইসরায়েলে হামলা চালানো থেকে বিরত থাকার জন্য ইরানকে আহ্বান জানিয়ে স্টারমার বলেন, ‘যুদ্ধে কারও স্বার্থ রক্ষা হবে না।’
ইরনা জানায়, পেজেশকিয়ান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থনের কারণেই ইসরায়েল নৃশংসতা চালিয়েছে এবং শান্তি ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
যুদ্ধে কোনো দেশেরই স্বার্থ রক্ষা হয় না, সে কথা স্বীকার করে নিলেও পেজেশকিয়ান বলেন, ‘একজন আগ্রাসীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক জবাব দেওয়াটা সব দেশের আইনি অধিকার এবং এভাবেই আগ্রাসন ও অপরাধ বন্ধ করা যেতে পারে।’
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় পরে আলাদাভাবে লন্ডন, প্যারিস ও বার্লিনের সংযত থাকার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে।